জাতীয় ডেস্ক:
সম্প্রতি ভুয়া আমন্ত্রণপত্রে আবেদন করে কানাডার ভিসা পাওয়া ৪৫ জন যাত্রীকে অফলোড করা হয়। এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম জানিয়েছেন, সিলেটের ৪৫ জন যাত্রী ভুয়া তথ্য দিয়ে কানাডা যাচ্ছিল। সেখানে কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল না।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) কুর্মিটোলায় বলাকা ভবনে সময় সংবাদকে এ তথ্য জানান তিনি।
ওই যাত্রীরা কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিল না উল্লেখ করে শফিউল আজিম বলেন, এটি নিশ্চিত হয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে তাদের আটকে দিয়েছে বিমান।
পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান জানিয়েছে, গত ৬ নভেম্বর রাত ৮টা ২৫ মিনিটে বিমানের ফ্লাইট বিজি৬০৬ যোগে সিলেট থেকে ৭৪ জন যাত্রী ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন। এসব যাত্রীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রী ছিলেন বিমানের টরন্টো ফ্লাইটের (বিজি৩০৫/৭নভেম্বর, ২০২৩) যাত্রী।
তখন বিমানের সিলেট স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা যাত্রীদের ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখতে পান ৪৫ জন যাত্রী একই ব্যক্তির আমন্ত্রণ পত্রে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশ্যে কানাডা যাচ্ছেন।
তাই তাৎক্ষণিকভাবে ডকুমেন্টগুলো পর্যালোচনা করে সন্দেহ হওয়ায় সিলেট স্টেশন থেকে যাত্রীর ডকুমেন্ট ঢাকার পাসপোর্ট কন্ট্রোল ইউনিটে (পিসিইউ) পাঠানো হয়। পরে ডকুমেন্টগুলো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দিল্লির কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির (সিবিএসএ) কাছে পাঠালে প্রথমে তারা জানায় সিবিএসএর সিস্টেমে যাত্রীর তালিকায় যাত্রীর তথ্য সঠিক রয়েছে।
ফলে সিলেট থেকে যাত্রীদের বোর্ডিং কার্ড ইস্যু করা হয় এবং সেই যাত্রীরা ঢাকায় পৌঁছান। তবে এরই মধ্যে কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি থেকে আবার জানানো হয় যে যাত্রীদের আমন্ত্রণপত্রের তথ্যের সঙ্গে আবাসন সংক্রান্ত সিস্টেমে গরমিল রয়েছে। যাত্রীদের আমন্ত্রণপত্রে হোটেলে থাকার কথা থাকলেও যাত্রীদের কাছে রেন্টেড হাউজের ডকুমেন্ট পাওয়া যায়।
প্রসঙ্গত, কানাডিয়ান আইন অনুযায়ী, একটি রেন্টেড হাউজে ৪৫ জন যাত্রী থাকার কোনো নিয়ম নেই এবং তা ফায়ার কোড ভায়োলেশন বলে বার্তায় উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যাত্রীদের ডকুমেন্টগুলো ও কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির বার্তা পর্যালোচনা এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে ৪৫ জন যাত্রীকে ৭ নভেম্বর টরন্টো ফ্লাইট থেকে অফলোড করা হয়।
ঢাকার পাসপোর্ট কন্ট্রোল ইউনিটের (পিসিইউ) মাধ্যমে ওই যাত্রীদের তথ্যাদি সিবিএসএর কাছে পাঠানো করা হয়েছে। কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের পর সংশ্লিষ্ট যাত্রীদেরকে ই-মেইলে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
এদিকে ওই যাত্রীদের হোটেল অফার করা হলে তারা হোটেলে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন বলেও জানানো হয়েছে। পরে তাদের যখন টরেন্টো ফ্লাইটে না পাঠানোর বিষয়টি বুঝিয়ে বলা হয়, তখন তারা সেই বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরবর্তী সময়ে ইমিগ্রেশন থেকে তাদের বহির্গমন সিল বাতিল করে ব্যাগেজ বুঝিয়ে দেয়া হয় এবং যাত্রীরা নিজেদের মতো এয়ারপোর্ট ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, যাত্রীর কাছে যথাযথ ডকুমেন্ট না থাকলে বা এ ধরনের ভায়োলেশনের জন্য কানাডিয়ান কর্তৃপক্ষ যাত্রীপ্রতি সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসকে ৩ হাজার ২০০ থেকে ২০ হাজার কানাডিয়ান ডলার পর্যন্ত জরিমানা আরোপ করতে পারে।