অনলাইন ডেস্ক :
দিনে ১৩০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার জুড়ে তাণ্ডব চালিয়ে ৩৫ হাজার মানুষের এক বছরের খাবার কেড়ে নিতে পারে পঙ্গপাল। জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন জানিয়েছে ভয়াবহ এই তথ্য।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পঙ্গপাল করোনার চেয়েও নাকি ভয়ঙ্কর। একবার হামলা চালিয়ে একটা দেশের মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে পারে এরা।
পঙ্গপাল কোনও বিশেষ কীট নয়। বিভিন্ন পতঙ্গ বা ঘাস ফড়িংয়ের ঝাঁক। জোটবদ্ধ হয়ে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে হানা দেয়। এই ধরনের আক্রমণকে ‘গ্রেগারিয়াস’ বলা হয়। ইতিহাস বলছে, পঙ্গপালের আক্রমণের পরই দেখা দিয়েছে দুর্ভিক্ষ।
ঘাস ফড়িংরা সাধারণত লাজুক প্রকৃতির। ইংরেজিতে লোকাস্ট বলা হয়। দৈর্ঘ ইঞ্চি খানেক হলেও একদিনে ২ গ্রাম খাবার সাবাড় করতে পারে একটি পতঙ্গ। একটা ঝাঁকে কয়েক লক্ষ পতঙ্গ থাকতে পারে। কখনও ৪ কোটি থেকে ৮ কোটি পতঙ্গও থাকে।
বাতাসের উষ্ণতার গতি অনুযায়ী ধাবিত হয় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায়। এক জায়গার খাবার ফুরালেই অন্য জায়গায় হানা দেয়। সম্পূর্ণ খাবার শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্যত্র যায় না তারা। দিনে ১০০ থেকে ২০০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে তাদের গতিবিধি থাকে।
একটি পূর্ণ বয়স্ক পতঙ্গ নিজের ওজনের খাবার খেতে পারে। অর্থাৎ দিনে প্রায় ২ গ্রাম শস্য খেতে পারে। এক বর্গ কিলোমিটারে ৪ কোটি থেকে ৮ কোটি পতঙ্গ থাকে।
জলবায়ুর ওপর নির্ভর করে একটি মরু পতঙ্গ বাঁচে ৩ থেকে ৪ মাস। ১২০ মাইল পর্যন্ত জমির ফসল খেতে পারে। একই সঙ্গে করে প্রজননও। জাতিসংঘ এক নির্দেশিকায় ‘হর্ন অব আফ্রিকা’ বলে উল্লেখ করে অর্থাৎ বেশি বৃষ্টিপাত হলে পঙ্গপালের বংশবিস্তার ব্যাপক পরিমাণে হয়।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০০৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত পশ্চিম আফ্রিকায় পঙ্গপালের হানায় ২৫০ কোটি ডলার ফসল ক্ষতি হয়েছে। চলতি মৌসুমে ভারতের কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হলে অর্থনীতি ভেঙে পড়বে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
সূত্র : রয়টার্স।