আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাবালিয়ায় রোববার ইসরাইলে হামলায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ৩৩ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন একই পরিবারের মা-বাবা, সন্তান, নাতি-নাতনিসহ সব সদস্যও। গাজার স্থানীয় সময় রোববার সকাল ছয়টায় উদ্বাস্তু শিবিরটিতে ওই হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহত ব্যক্তিরা ওই শিবিরের বাসিন্দা। পূর্ব সতর্কতামূলক কোনো বার্তা ছাড়াই ইসরায়েল উদ্বাস্তু শিবিরের একটি ভবনে এ হামলা চালায়। ওই সময় লোকজন ভবনের ভেতরে অবস্থান করছিলেন। এর আগে শনিবারের হামলায় প্রাণ ঝরেছে আরও ৪৪ ফিলিস্তিনির।
এদিকে, ইসরাইলের এমন বর্বরতার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাতার। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামাস-ইসরাইল আলোচনা নিয়ে আন্তরিক না হলে, তাদের এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। এনিয়ে আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি হামাস ও ইসরাইল।
গত এক বছরের বেশি সময় ধরে টানা ইসরাইলি হামলায় এরিমধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গোটা গাজা উপত্যকা। শনিবারও ইসরাইলি বর্বর হামলায় কেঁপে ওঠে দেইর আল বালাহ। সেখানের আশ্রয় শিবিরে দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বিমান বাহিনী।
হামলা হয়েছে আল আকসা হাসপাতাল চত্বরেও। সেখানের ভেতরের শরণার্থী শিবিরে বাস্তুচ্যুত অনেক ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে। ইসরাইল সশস্ত্র গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানোর দাবি করলেও সেখানে থাকা ফিলিস্তিনিরা জানান সেখানের সবাই বেসামরিক নাগরিক।
গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা হামলায় আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ হাজার ৫৫২ জনে পৌঁছেছে বলে শনিবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এমন বর্বরতার মধ্যেই গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাতার। সে সঙ্গে রাজধানী দোহায় হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয়ের আর প্রয়োজন নেই বলেও জানিয়েছে কাতার।
দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামাস ও ইসরাইল আলোচনার টেবিলে আন্তরিকভাবে ফিরে আসার আগ্রহ দেখানোর আগ পর্যন্ত তাদের এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশর গাজায় যুদ্ধবিরতি ও হামাসের হাতে থাকা ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির জন্য বিভিন্ন আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, কাতার এরিই মধ্যে ইসরাইল ও হামাসকে জানিয়ে দিয়েছে, যে পর্যন্ত না তারা শুভ বিশ্বাসের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হবে, তারা মধ্যস্থতা আর চালিয়ে যেতে পারবে না। আর এর ফলে হামাসের রাজনৈতিক দপ্তরও আর এর উদ্দেশ্য সাধন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, কাতার মার্কিন প্রশাসনকে জানিয়েছে, যখন হামাস-ইসরাইল আন্তরিক ইচ্ছার সঙ্গে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসতে চাইবে তখন তারও মধ্যস্থতায় ফের যুক্ত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রশাসন কাতারের কাছে হামাসকে আর নিরাপদ আশ্রয় না দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
মেক্সিকোতে বারে বন্দুক হামলা, নিহত ১০মেক্সিকোতে বারে বন্দুক হামলা, নিহত ১০
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের পাশাপাশি কাতার গাজায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে বিরতির ব্যবস্থা করার জন্য চলমান আলোচনায় বড় ধরনের ভূমিকা পালন করছিল। অক্টোবরের মাঝামাঝি শুরু হওয়া এ আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে, হামাস স্বল্প মেয়াদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।