হোম জাতীয় ২০৫০ সালের মধ্যে লবণাক্ততার ঝুঁকিতে উপকূলীয় ৭০ ভাগ ভূমি: কৃষিমন্ত্রী

জাতীয় ডেস্ক:

কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় শিকার। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ২০ লাখ হেক্টর জমি লবণাক্ততায় আক্রান্ত। এ ছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৭০ শতাংশ ভূমি লবণাক্ততায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

বুধবার (২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে স্টান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি)-এর যৌথ আয়োজনে ‘ক্লাইমেট অ্যাডাপটেশন: অপরচুনিটিজ ফর বাংলাদেশ ইন ডেভেলপমেন্ট অব অ্যাগ্রো বেইজড ইন্ডাস্ট্রিজ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ আরও বেশি। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও গবেষণার জন্য তিনি দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বাংলাদেশ ছিল খাদ্যসংকটের দেশ, খাদ্য আমদানি করতে হতো। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে।

ক্ষমতায় আসার পর খাদ্যসংকট মোকাবিলায় নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ধানের উপাদন বাড়াতে সারের দাম কমানো হয়েছে। এর ফলে ২০১৫ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে।

দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের সব মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য কৃষি খাতের আধুনিকায়নে জোর দেয়া হয়েছে।

খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দেন কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, উৎপাদন খরচ বাড়ার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে কৃষিশ্রমিক সংকট। এ সমস্যা মোকাবিলায় কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করতে হবে। এ জন্য সরকার তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। পাশাপাশি সারে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে।

দেশে কৃষিভিত্তিক শিল্প ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী দেশের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী সমাজকে কৃষিখাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কৃষিজাত পণ্য আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আইসিসিবির সভাপতি মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. সাহাবউদ্দিন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের জন্য এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ সরকার।

এর আগে অনুষ্ঠিত প্যানেল আলোচনার ‘কি-নোট পেপার’ উপস্থাপন করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. রুহুল আমিন তালুকদার। তিনি বলেন, কৃষিক্ষেত্রে শুধু উৎপাদন বাড়ালেই হবে না। এই সেক্টরের উন্নয়নে এখাতে প্রয়োজনীয় ভ্যালু অ্যাড করতে হবে। উৎপাদনের বৈচিত্র্য বাড়াতে হবে। এ জন্য কৃষিখাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বর্তমান সরকারকে কৃষিবান্ধব উল্লেখ করে বর্তমান সরকার কৃষির উন্নয়নে বিভিন্ন নীতি প্রণয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।

প্যানেল বক্তা হিসেবে আরও বক্তব্য দেন এসিআই মোটরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এফ এইচ আনসারী, এফএও-এর সিনিয়র ন্যাশনাল লিড অ্যাগ্রোনোমিস্ট ড. মো. আব্দুল কাদের, বেঙ্গল মিট প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান নির্বাহী এ এফ এম আসিফ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. খুরশিদ আলম।

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্য দেন আইসিসিবি বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে আজাদ।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন