মোংলা প্রতিনিধি:
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে অবৈধভাবে মাছ শিকার করে ভারতীয় জেলেরা। ইলিশসহ অন্তত ১০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ শিকার করেন তারা। কিন্ত এসব মাছ আর তাদের নিজ দেশ ভারতে নিতে পারেননি। তার আগেই তারা ধরা পড়েন বাংলাদেশের নৌবাহিনীর হাতে। দুটি ফিশিং ট্রলারসহ ৩৪ জন ভারতীয় জেলে সোমবার গিবাগত রাতে আটক হন। তবে আটক জেলেদের মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বাগেরহাট জেল হাজতে পাঠনো হলেও জব্দ হওয়া আট হাজার কেজি অবৈধ মাছ নিলামে তুলে বিক্রি করে স্থানীয় মৎস্য অফিস।
সোমবার (১৪ জুলাই) রাত ১১টা থেকে নিলামের হাকডাক শুরু হয়ে মঙ্গলবার ভোররাতে রফা হয় নির্ধারিত দামে। ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিলামে সর্বচ্চো মূল্য দিয়ে মাছ গুলো নেয় ‘সাগর ফিস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এরসাথে ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর)
যোগ হয়ে মোট দাম হয় ১৭ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা। আর এভাবেই ভারতীয় জেলেদের জালে ধরা অবৈধ মাছ হয়ে যায় বৈধ মাছ ।
মোংলা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, সামুদ্রিক মৎস্য আইন-২০২০ অনুযায়ী শিকার হওয়া অবৈধ মাছ নিলামে তুলে বিক্রির বিধান রয়েছে। এ কারণে অবৈধভাবে ভারতীয় জেলেদের জালে ধরা ইলিশ, বেলে, রূপচাঁদা, ছুরি, চিংড়িসহ ১০ প্রজাতির আট হাজার সামুদ্রিক মাছ নিলামে তুলে বিক্রি করা হয়। বিক্রি হওয়া মাছের ১৭ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে মাছ শিকার করা ৩৪ ভারতীয় জেলেকে আটক করে নৌবাহিনী । এ সময় ‘এফবি ঝড়’ ও ‘এফবি মঙ্গল চন্ডি-৩৮’ নামে ভারতীয় দুটি মাছ ধরার ট্রলারও জব্দ করা হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিয়মিত টহল চলাকালে জাহাজের রাডারে সন্দেহজনক মাছ ধরার ট্রলারের উপস্থিতি লক্ষ করে। এ সময় তারা ওই ট্রলারের দিকে এগোতে থাকলে মাছ ধরার ট্রলারগুলো পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন নৌবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে দুটি ভারতীয় ট্রলারকে বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যে আটক করেন।
আটক জেলেদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, আটক ৩৪ ভারতীয় জেলেদের বিরুদ্ধে সমুদ্র আইন (২০২০) ২৫ ‘এ’ বা মেরিন ফিশারিজ ‘ল’ ধরায় মামলা হয়েছে। মোংলা নৌঘাঁটির পেটি অফিসার রেজাউল করিম বাদী হয়ে এই মামলা করেন। আসামীদের বাড়ী ভারতের দক্ষিন চব্বিশ পরগনা জেলায়। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে বাগেরহাট জেলা কারগারে প্রেরণ করা হয়েছে। # #