হোম জাতীয় ১৩ দিন সন্ধ্যা থেকে সকাল সোনাহাট সেতুতে চলাচল বন্ধ

জাতীয় ডেস্ক:

ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মেরামতের জন্য কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সোনাহাট সেতুটি ১৩ দিন সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকবে। মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) যান চলাচল বন্ধ রেখে ব্রিজটি মেরামতের ঘোষণা দেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এ সময়ে স্থলবন্দর থেকে ভারি পণ্যবাহী ট্রাকসহ ও সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সেতুটির বিভিন্ন স্থানে পাটাতন ভেঙে গেছে এবং ট্যাংক জাম (লোহার পাতি) খুলে গেছে। এ অবস্থায় বিশেষ করে সোনাহাট স্থলবন্দরের পণ্য আনা নেয়ার জন্য ঝুঁকি নিয়েই যান চলাচল করে আসছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। তারই অংশ হিসেবে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত হয় ১২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেয়া হয়। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে পড়ে রেল যোগাযোগ। পরবর্তীতে এরশাদ সরকারের আমলে সেতুটি মেরামত করে ভূরুঙ্গামারী দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন ও কচাকাটা ও মাদারগঞ্জের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়।

নির্মাণকালে সেতুটির আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০০ বছর। সে মতে সোনাহাট সেতুর মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে অনেক আগেই। নড়বড়ে সেতুটি যেকোনো সময়ে ঘটতে পাড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সোনাহাট স্থলবন্দরের যাবতীয় কার্যক্রম।

এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ রেলসেতুটির পাশে দুধকুমার নদের দক্ষিণে মোট ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৪৫ মিটার লম্বা পিসি গার্ডার সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে। ওই সেতুটির নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হলেও অর্ধেক কাজ শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। সেতুটির কাজ দ্রুত শেষ করা দাবি স্থানীয়দের।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ জানান, সেতু দিয়ে প্রতিদিনই অসংখ্য পাথর বোঝাই ট্রাক চলাচল করে। পাথর বোঝাই ট্রাক চলাচলের সময় সেতুটি কাঁপে। এছাড়া সরু সেতু দিয়ে একদিক থেকে ট্রাক প্রবেশ করলে অন্যদিক যান চলাচল বন্ধ থাকে।

সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি ও রফতানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক জানান, সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ব্রিজ মেরামতের কাজ করলে পণ্য পরিবহনে কোনও সমস্যা হবে না। এর আগেও অনেক বার এভাবে সংস্থার কাজ করা হয়েছিল। তবে সোনাহাট স্থলবন্দরের গতি বাড়াতে নতুন সেতুটির কাজ দ্রুত শেষ করার কথা জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজের প্লেটগুলো আগের থেকে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলোর মেরামত করা হবে। দুর্ঘটনা এড়াতেই সংস্কারের জন্য ঘোষিত প্রতিদিনের নির্ধারিত সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সংস্কারের কাজ শেষ হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন