হোম রাজনীতি হালুয়া-রুটির লোভে নির্বাচনে যাচ্ছে যুক্তফ্রন্ট : বাংলাদেশ ন্যাপ

রাজনীতি ডেস্ক:

বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বাধীন তিন দলের সমন্বয়ে নবগঠিত জোট যুক্তফ্রন্ট হালুয়া-রুটির লোভে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ন্যাপ।

দলটির চেয়ারম্যান এমএন শাওন সাদেকী ও মহাসচিব প্রকৌশলী আবদুল বারিক আজ বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা মনে করি জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া বাংলাদেশের মাটিতে একতরফা কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ দেশবাসী তপশিলকে প্রত্যাখান করেছে। কিন্তু সামান্য কিছু অর্থের লোভে এবং জুলুম-নিপীড়নকে বৈধতা দিতেই যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে যাচ্ছে। তবে দেশবাসীর কাছে তাদের পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে।

তারা বলেন, যুক্তফ্রন্ট নামে নতুন জোট করে বর্তমান অবৈধ নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তপশিলে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা সরকারের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করার চেষ্টায় সহযোগিতা করার শামিল। এই সকল জাতীয় বেঈমান হিসেবে দেশবাসীর কাছে চিহ্নিত এবং ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন।

প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সরকার পদত্যাগের ‘এক দফা’ দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ১২ দলীয় জোটের সঙ্গ ত্যাগ করে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে জোটটি। নতুন এই জোটে তিনটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাত ঘড়ি), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (পাঞ্জা) এবং কাঁঠাল প্রতীকের বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মতিন)। আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম এই নতুন জোট ও নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

যুক্তফ্রন্ট গঠনের প্রেক্ষাপট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তিনটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক মিলে আজকে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেছি। আমাদের বক্তব্য সকলের জন্য সমালোচনার দুয়ার উন্মুক্ত থাকলো জনগণের দোয়া, সহযোগিতা সর্বোপরি আল্লাহ রহমত থাকলে সাফল্য আসবে। একইসঙ্গে আমরা আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত হয়েছি। সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সম্ভাবনা আছে, গ্যারান্টি নাই, সম্ভাবনা আছে যে ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন কয়েকদিন বিলম্ব হতেও পারে, নাও হতে পারে। যদি মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন বিলম্ব হয় তাহলে বাকি তারিখগুলো আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পাবে। আমরা যুক্তফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন জোটগতভাবে অংশ নেবো।

সৈয়দ ইবরাহিম বলেন, আমরা তার জন্য বড় রিস্ক নিচ্ছি। অতীতেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে বড় বড় দল, ছোট ছোট দল অংশ নিয়েছেন। আমরাও অনেক বড় দল নই, ছোট দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেবো আশঙ্কা নিয়ে। আশঙ্কার উত্তর হচ্ছে সরকারের ওয়াদা ২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনকে জাতি ও বিশ্বের সামনে গ্রহণযোগ্য করতে চাই।

তিনি বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত কারো পছন্দ হবে, কারো হবে না, এই সিদ্ধান্ত সমালোচনা করার অধিকার সকলেরই থাকবে। বাংলাদেশের সাধারণত সমালোচনা করার শব্দগুলো হয় এরকম বেঁচা গেছে, দালাল হয়ে গেছে, বিশ্বাসঘাতক হয়ে গেছে, মীরজাফর হয়ে গেছে। আমার আবেদন থাকবে পরিস্থিতি-পরিবেশকে পূর্ণাঙ্গভাবে মূল্যায়ণ করে মন্তব্য করবেন। কিন্তু প্রত্যেকের মন্তব্যের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ইচ্ছা থাকবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামী কিছু সপ্তাহ বাংলাদেশের জন্য রাজনৈতিকভাবে সংকটময় এবং এই সংকটের মধ্য দিয়ে আমাদের উত্তরণ ইনশাআল্লাহ ঘটবে, ঘটলে যে প্রত্যয়গুলো আমরা ব্যক্ত করেছি এগুলো অর্জনে আমাদের সহায়তা হবে।

‘১০০ আসনে মনোনয়নের প্রস্ততি’
সৈয়দ ইবরাহিম বলেন, দ্বাদশ নির্বাচনে ১‘শ আসনে মনোনয়ন দেওয়ার প্রস্তুতি আমাদের আছে। আমাদের নিজ নিজ দলের প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নিবন্ধিত প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেবে। ওয়ান-ইলেভেনের জরুরি অবস্থার মধ্যে দেশের রাজনৈতিক পালাবদলের বিশেষ এক মুহুর্তে ২০০৭ সালের ৪ ডিসেম্বর ‘পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি’ স্লোগান সামনে রেখে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক। নতুন এই যুক্তফ্রন্ট গঠনের আগে তিনি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এবং সর্বশেষ জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দারের নেতৃত্বে ১২ দলীয় জোট ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) সভাপতি শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, মহাসচিব তফাজ্জল হোসেন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (মতিন) মহাসচিব জাফর আহমেদ জয়, নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহাসচিব ফারক-উল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবদুল আউয়াল মামুন, স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ইকবাল হাসান মাহমুদ প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন