নিউজ ডেস্ক:
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কারের সাথে বিভিন্ন চিরকুটও পাওয়া যায়। এবার ৩ মাস ২৭ দিন পর পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়েছে। এতে মিলেছে রেকর্ড ৩৫ বস্তা টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার। এছাড়া রয়েছে মনোবাসনা পূর্ণ করতে বিভিন্ন চিঠি-চিরকুট। একটি চিরকুট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। বেনামে লেখা ওই চিঠি চিরকুটে একজন লিখেছেন- ‘হাদী হত্যার প্রকাশ্যে বিচার চাই।’
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় পাগলা মসজিদের ১৩টি দানবাক্স থেকে রেকর্ড ৩৫ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। সাথে পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণের গয়না ও বিভিন্ন চিরকুট। গণনায় অংশ নিয়েছেন প্রায় ৫০০ জনের একটি দল।
এর আগে এমন আরেকটি চিঠি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছিল। যেখানে লেখা ছিল- ‘ডাইনি হাসিনাকে তার কর্মের শাস্তি না দেখা পর্যন্ত আমাকে বাঁচিয়ে রেখ। আল্লাহ, অনেক আলেমকে কষ্ট দিছে। আমার প্রিয় সাঈদীকে অনেক অত্যাচার করছে। হে আল্লাহ আমার প্রিয় বাংলাদেশে একজন ওমর (রা.) মতো শাসক পাঠাও ‘
আরেকটি চিরকুটে একজন নারী লিখেছেন, ‘হে আল্লাহ আপনি আমার স্বামী মো. জসিমকে পাগলা মসজিদের ওসিলাতে একটি ভালো চাকরির ব্যবস্থা করে দিন। আপনি আমার স্বামীকে হেফাজতে রাখুন ওনার ওসিলাতে আপনি আমাদের রিযিকের ব্যবস্থা করে দিন। হে আল্লাহ আপনি পাগলা বাবার ওসিলাতে চাকরির ব্যবস্থা করে দিন- আমিন।’
আরেকটি চিরকুটে লেখা, ‘আল্লাহ আমি যেন একটা মানসম্মত নাম্বার পাই, একটা ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারি। আমার মাথার সব খারাপ চিন্তা দূর হয়ে যায়। আল্লাহ আমার মা-বাবারে ভালো রাখেন। আমি যেন রফিকুল ইসলাম কলেজে ভর্তি হতে পারি।’
টাকা গণনার কাজে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জেসমিন আক্তার,সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান মারুফ রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ আলী হারেছীসহ ঐতিহাসিক জামিয়া ইমদাদিয়া মাদ্রাসার ২২০ ও পাগলা মসজিদের নুরুল কোরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসার ১২০ জন ছাত্র, ব্যাংকের ১০০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।
কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা বলেন, আপনারা জানেন কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অন্যতম একটি জায়গা। সকল ধর্মের মানুষ এখানে দান করে থাকেন। তাদের দানের অর্থ দিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স করা হবে, যেখানে একসাথে ৩০ হাজার মুসল্লি জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবেন। মসজিদটির নকশা প্রণয়নের কাজ শেষ দিকে। খুব শিগগিরই কাজ শুরু করতে পারবো।
তিনি বলেন, এবার আমরা তিন মাস ২৭দিন পর দানবক্স খুলি। এবার রেকর্ড ৩৫ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। ব্যাংক কর্মকর্তা ও মাদ্রাসার ছাত্ররা টাকা গণনার কাজ করছেন। কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত এ মসজিদটির তেরোটি লোহার দানবক্স আছে। প্রতি তিন মাস পর পর দানবক্স খোলা হয়। এবার ৩ মাস ২৭ দিন পর দানবক্স খোলা হয়েছে। এতে মিলেছে রেকর্ড ৩৫ বস্তা টাকা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার। এছাড়াও মিলেছে মনোবাসনা পূর্ণ করতে বিভিন্ন চিরকুট।
