নিউজ ডেস্ক:
মাদক, অস্ত্র, মানবপাচার থেকে শুরু করে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণসহ নানা অপরাধের রাজ্য হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। মাসে গড়ে মামলা হচ্ছে ৪২টি। এছাড়াও অনেক অপরাধ থাকছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর দৃষ্টির বাইরে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সংকটাপন্ন এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে অপরাধ প্রবণতা গেড়ে বসেছে।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের মানবিক আশ্রয়কেন্দ্রগুলো এখন পরিণত হয়েছে অপরাধের আখড়ায়। হত্যা, ধর্ষণ, মাদক, মানবপাচারসহ এমন কোন অপরাধ নেই, যা ক্যাম্পগুলোতে ঘটছে না। অপরাধ পরিসংখ্যানের গ্রাফ বরাবরই ঊর্ধ্বমুখী।
হত্যা মামলা ২৬৩, মাদক মামলা ২ হাজার ৫৮৯, অস্ত্র মামলা ৪১৮, ধর্ষণ মামরা ১৪৫, অপহরণ মামলা ৯৩, মানব পাচার মামলা ৫৫ এবং অন্যান্য মামলা ৪৩২ টি মামলা রয়েছে।
শুধুমাত্র রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক ৪ হাজার ৫৪ মামলায় এখনও পর্যন্ত আসামি ৯ হাজার ৩৩জন। মামলা না হওয়ায় অনেক অপরাধই হারিয়ে যায় ক্যাম্পের বিভিন্ন অলিগলিতে।
ক্যাম্পগুলোতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সক্রিয় ৬টি বড় গ্রুপ। এসব গ্রুপের মধ্যে আছে আবার অনেকগুলো উপগ্রুপ। বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা সংকটে থাকা রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলার এমন অবনতি অনিবার্য।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের সন্তানদের নিয়ে তাদের ভবিষ্যতের কোনো নিশ্চয়তা নেই। তখন মানুষের মধ্যে এক ধরনের সন্ত্রাসী প্রবণতা বা এক ধরনের বিষণ্ণতা, না পাওয়ার অন্ধকার থেকে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সৃষ্টি হয়।’
এদিকে, রোহিঙ্গাদের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে করা মামলার অগ্রগতি নিয়ে আছে প্রশ্ন। বিচার কাজে ধীরগতি থাকায় বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা, মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সচেতন নাগরিক কমিটির সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তারও আধুনিক প্রযুক্তিসহ নানা বিষয়ে আরও অগ্রবর্তী হওয়া উচিত। যার মাধ্যমে সত্যিকারের অপরাধী এবং অপরাধের কর্মকাণ্ডটা বিচারকের সামনে বেড়িয়ে আসবে।’
ইতোমধ্যে কক্সবাজার ও আশপাশের জেলার নিরাপত্তা জোরদার এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে বিশেষ টাস্কফোর্স।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ বলেন, ‘কক্সবাজারের নাগরিকদের বসবাসের যে পরিবেশ হুমকির মুখে। উখিয়াসহ অন্যান্য জায়গায় বসবাসরত নাগরিকরা বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন। তারা ইচ্ছে করেই অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছেন ভালো পরিবেশে বসবাস করার জন্যে।’
উখিয়া–টেকনাফের ৩৩ আশ্রয় শিবিরে বর্তমানে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৪ লাখের বেশি। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে আসা অনেক অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাও রয়েছে সেখানে।