আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্পেসএক্সের স্টারশিপ রকেটের সর্বশেষ পরীক্ষা উৎক্ষেপণের কয়েক মিনিট পর ব্যর্থ হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস থেকে উৎক্ষেপণের পর জটিলতার কারণে স্টারশিপের উপরের অংশ হারিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কোম্পাইনটি। তবে সুপার হেভি বুস্টার পরিকল্পনামতো উৎক্ষেপণস্থলে ফিরে আসায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্মীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
স্পেসএক্স সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানায়, উৎক্ষেপণ চলাকালে স্টারশিপ একটি অপ্রত্যাশিত কারিগরি সমস্যার সম্মুখীন হয়। আজকের পরীক্ষার ডেটা বিশ্লেষণ করে সমস্যার মূল কারণ বোঝার চেষ্টা চলছে।
স্পেসএক্স আরও জানায়, এ ধরনের পরীক্ষায় সাফল্যের মানে হলো শেখা এবং আজকের ফ্লাইট স্টারশিপের নির্ভরযোগ্যতা উন্নত করতে সহায়তা করবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা অযাচাইকৃত ভিডিওতে রকেটটিকে আগুনে বিধ্বস্ত হতে দেখা গেছে। এছাড়া, হাইতির রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের আকাশে আগুনের বল উড়তে দেখার খবর পাওয়া গেছে।
ইলন মাস্ক এক্স-এ পোস্টে বলেছেন, সাফল্যের নিশ্চয়তা নেই, তবে বিনোদন নিশ্চিত!
তিনি রকেটের জ্বলন্ত পথের একটি ভিডিওও শেয়ার করে লিখেছেন, উন্নত সংস্করণের স্টারশিপ ও বুস্টার উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রকেটের ইঞ্জিন ফায়ারওয়ালের ওপরে অক্সিজেন ও জ্বালানির লিকেজ ঘটে। এটি এতটাই চাপে পৌঁছায় যে, তা ভেন্টিং সিস্টেমের সক্ষমতার বাইরে চলে যায়। তবে পরবর্তী উৎক্ষেপণের সময়সূচি আপাতত অপরিবর্তিত রয়েছে।
স্পেসএক্স লাইভস্ট্রিম অনুযায়ী, এই উৎক্ষেপণের ভিডিও ৭.২ মিলিয়ন ভিউ অর্জন করেছে।
স্টারশিপ সিস্টেমটি টেক্সাসের বোকা চিকা থেকে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৫টা ৩৮মিনিটে (২২টা ৩৮ মিনিট জিএমটি) সপ্তম পরীক্ষামূলক মিশনের অংশ হিসেবে উৎক্ষেপিত হয়। উৎক্ষেপণের চার মিনিটের মাথায় স্টারশিপের উপরের অংশ সুপার হেভি বুস্টার থেকে আলাদা হয়, যা পরিকল্পনামতো সম্পন্ন হয়।
কিন্তু এরপরই, লাইভস্ট্রিমে স্পেসএক্স যোগাযোগ ব্যবস্থাপক ড্যান হুয়েট জানান, মিশন টিম স্টারশিপের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়েছে।
এদিকে, সুপার হেভি বুস্টার সাত মিনিটের মাথায় উৎক্ষেপণস্থলে ফিরে আসায় নিয়ন্ত্রণ কক্ষে উচ্ছ্বাস দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্র ফেডারেল অ্যাভিয়েশন প্রশাসনের (এফএএ) জানিয়েছে, স্পেসএক্স মিশনের সময় একটি সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, স্পেস ভেহিকলের ধ্বংসাবশেষ পতনের আশঙ্কায় এফএএ সাময়িকভাবে ওই এলাকার আকাশপথে বিমান চলাচল সীমিত করে। এখন সবকিছু স্বাভাবিক হয়েছে।
ব্লু অরিজিনের নতুন সাফল্য
স্পেসএক্সের পরীক্ষার আগের দিন ব্লু অরিজিন কোম্পানি প্রথমবারের মতো তাদের রকেট সিস্টেম নিউ গ্লেন সফলভাবে কক্ষপথে পাঠিয়েছে। এটি অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের কোম্পানির জন্য একটি বিশাল অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এছাড়া, বুধবার স্পেসএক্সের আরেকটি রকেট ফ্লোরিডা থেকে দুটি চন্দ্রযান এবং একটি মাইক্রো রোভার চাঁদে পাঠায়।