হোম খেলাধুলা স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন শেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের

খেলাধূলা ডেস্ক:

দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ ভাগ্য ঝুলছিল চিকন সুতোর ওপর। কোয়ালিফায়ার রাউন্ডে তৃতীয় দল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিল সুপার সিক্সে। তাই ভারতের মাটিতে আসন্ন বিশ্বকাপ খেলতে বাকি ম্যাচগুলোতে জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না তাদের। কিন্তু স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে লজ্জার হারে সেই সম্ভাবনাটুকুও শেষ হয়ে গেল ক্যারিবীয়দের।

প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপে দেখা যাবে না দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। হারারেতে শনিবার (১ জুলাই) স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেটে হেরে গেছে শাই হোপের দল। তাতেই শেষ আশাটুকুও ফুরিয়ে গেল এক সময়ের প্রতাপশালী ক্যারিবীয়দের। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে স্কটিশদের বোলিং তোপে মাত্র ৪৩.৫ ওভারে মাত্র ১৮১ রানেই গুটিয়ে যায় শাই হোপ-পুরানরা। জবাবে ৩৯ বল হাতে রেখেই ৭ উইকেটে জয় পায় রিচি বেরিংটনের দল। ই জয়ে টিকে থাকল স্কটল্যান্ডের বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপ থেকে বলতে গেলে ছিটকে গেছে আগেই। টিম টিম করে তবু একটু জ্বলছিল আশার বাতি। সুপার সিক্স পর্বের তিন ম্যাচেই যদি জিততে পারত আর অন্য দলগুলো একটু পা হড়াকাত তবে হয়ত বিশ্বকাপে দেখা যেত নিকলাস পুরান-শাই হোপদের। কিন্তু স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো হারের স্বাদ পেয়ে সে সম্ভাবনাটুকুও শেষ। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি ক্লাইভ লয়েড, ভিভ রিচার্ডস, গর্ডন গ্রিনিজ আর ব্রায়ান লারাদের মতো কিংবদন্তির উত্তরসূরিদের ছাড়াই ভারতের মাটিতে বসবে বিশ্বকাপের এবারের আসর।

এদিন টস জিতে আগে ফিল্ডিং নেওয়া স্কটিশরা ম্যাচটা বের করে নিয়েছে প্রথম ইনিংসেই। ক্যারিবীয়রা ভয়ঙ্কর ব্যাটিং করে ৪৩.৫ ওভারে মাত্র ১৮১ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর স্কটিশদের দরকার ছিল শুধু ঠাণ্ডা মাথায় ঝুঁকিহীন ক্রিকেট খেলা। কাজটা দারুণভাবে সেরেছে তারা। হারারে ক্রিকেট গ্রাউন্ডের মাঠ রান তাড়ায় এমনিই বেশি সুবিধাদায়ক। সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে ৩৯ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখেই আয়েশেই জিতেছে ব্যারিংটনের দল।

সকালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে মড়ক লাগানোর কাজটা করেন ব্রেন্ডন ম্যাকমুলেন। ২৫ রানের মধ্যেই তিনি গুড়িয়ে দেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের টপ অর্ডার। একে একে ফেরান জনসন চার্লস, শামারাহ ব্রুকস ও ব্রেন্ডন কিংকে। কিং ২২ রান করলেও বাকি দুজন রানের খাতাই খুলতে পারেননি। ৩০ রানের মাথায় ক্রিস মেয়ার্সের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন ক্রিস সোল।

নিকলাস পুরানের সঙ্গে ৩০ রানের জুটিতে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেন অধিনায়ক শাই হোপ। কিন্তু শাফিয়ান শরিফের বলে উইকেটকিপারের হাতে ধরা দেন ১৩ রান করা হোপ। আশার বাতি তো সেখানেই নিভে যায় ড্যারেন স্যামির শিষ্যদের। ৮১ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২১ রান করা পুরানকে ম্যাকব্রাইডের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন ওয়াট।

নেভার আগে নাকি বাতি দপ করে জ্বলে ওঠে। সেই জ্বলে ওঠার কাজটাই হয়ত করেছেন জেসন হোল্ডার ও রোমারিও শেফার্ড। সপ্তম উইকেট জুটিতে ৫৭ রান যোগ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দেড়শ রান পার করে দেন তারা। ওয়াটের বলে এক হাতে দারুণ ক্যাচ নিয়ে তাকে প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখিয়ে দেন শরিফ। ফেরার আগে শেফার্ড করেন ৩৬ রান। আর রান যোগ হওয়ার আগেই পরের ওভারে হোল্ডারকে ফিরিয়ে দেন গ্রেভস। এলবিডব্লু হওয়ার আগে দলীয় সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন এই অলরাউন্ডার। শেষ পর্যন্ত ১৮১ রানেই থামে ক্যারিবীয়রা।

অল্প লক্ষে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য স্কটল্যান্ডের শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম বলেই ক্রিস্টোফার ম্যাকব্রাইডকে ফিরিয়ে দেন হোল্ডার। তাতে একটু আশার আলো দেখলেও দেখতে পারে স্যামির শিষ্যরা। কিন্তু সেখানেই শেষ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১২৫ রান যোগ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আশার বেলুন ফুটো করে দেন ম্যাথু ক্রস ও ম্যাকমুলেনের জুটি।

বল হাতে ক্যারিবীয়দের সর্বনাশ করা ম্যাকমুলেন ব্যাট হাতেও পূরণ করেছেন সময়ের দাবি। ১০৬ বলে ৬৯ রান করেছেন ৮টি চার ও ১ ছয়ে। এরপর তারা তৃতীয় ও শেষ উইকেটটি হারায় ১৬২ রানে, জয়ের জন্য যখন দরকার মোটে ২০ রান। ৩৩ বলে ১৮ রান করে আকিল হোসেনের শিকারে পরিণত হন জর্জ মুনসে।

জয়ের জন্য বাকি পথটা অধিনায়ক ব্যারিংটনকে নিয়ে পাড়ি দেন ওপেনার ম্যাথু ক্রস। ১০৭ বলে ৭ চারে ৭৪ রানের ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেন এই উইকেটকিপার ব্যাটার। ব্যারিংটন অপরাজিত থাকেন ১৩ রানে।

৬৯ রান ও ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন ম্যাকমুলেন।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন