আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সৌদি আরবে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। সম্প্রতি কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, সৌদি কর্তৃপক্ষ চাঁদ দেখার ব্যাপারে ভুল তথ্য দিয়েছে। এতে ঈদুল ফিতর একদিন আগে পালন করা হয়েছে। এই ঘটনায় দেশটির জনগণের মধ্যে কাফফারা দেওয়ার প্রস্তাবও উঠেছে। তবে এ বিষয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। খবর সূত্র: দ্য নিউ আরব।
অন্যদিকে, কিছু আরব দেশ রোববার (৩০ মার্চ) ঈদ ঘোষণা করলেও, মিশর, জর্ডান, সিরিয়াসহ সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলো সৌদি আরবের সিদ্ধান্ত না মেনে সোমবার ঈদ উদযাপন করেছে। এছাড়া শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরান এবং ওমানের ইবাদি ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ (ওমানে ৪৫% ইবাদি, ৪৫% সুন্নি, ৫% শিয়া) সোমবারই ঈদ পালন করেছে।
বিশ্বের অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ সৌদি আরবের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, যেদিন শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল, সেদিন সূর্যগ্রহণের কারণে চাঁদ দেখা সম্ভবই ছিল না। আবুধাবির আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্রও জানিয়েছে, পূর্ব গোলার্ধে সেদিন চাঁদ দেখার কোনো সুযোগ ছিল না।
নিউ ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ইমাদ আহমেদ বলেছেন, ইসলামি মাসগুলো চাঁদের নতুন পর্যায় থেকে নয়, বরং অর্ধচন্দ্রের পর্যায় থেকে শুরু হয়। এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। অনেকে মনে করেন, এর ফলে কোটি কোটি মুসলিম একদিন আগেই রোজা শেষ করেছেন।
প্রতিবেদন বলছে, ২০১১ সালে সৌদি চাঁদ দেখার কর্তৃপক্ষ শনি গ্রহকে চাঁদ ভেবে ভুল করেছিল। ২০১৯ সালেও এমন একটি ঘটনা ঘটেছিল। যদিও সৌদি কর্তৃপক্ষ উভয় ঘটনার প্রতিবেদন অস্বীকার করেছে।
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি উৎসবে চাঁদ দেখা নিয়ে মাঝে মাঝে বিতর্ক হয়। কিছু দেশ জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব ও আধুনিক প্রযুক্তির ওপর ভর করে, আবার কেউ কেউ খালি চোখে চাঁদ দেখে ঈদ পালন করে। এই বিতর্কের মধ্যে, ইসলামে চাঁদ দেখার সঠিক পদ্ধতি নিয়ে মতপার্থক্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে আছে।