হোম অন্যান্যসারাদেশ সেপ্টেম্বরে চালু হবে মোংলা-খুলনা রেল চলাচল

অনলাইন ডেস্ক:

মোংলা- খুলনা রেলপথের নির্মান কাজ এখন একেবারেই শেষের পথে। আগামী সেপ্টেম্বরের শেষে বহু কাঙ্ক্ষিত খুলনা-মোংলা রেলপথ উদ্বোধন করা হবে।

ইতিমধ্যে রেলপথের ৯৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী থাকা মাত্র দুই শতাংশ রেলপথ ও কিছু ফিনিশিংয়ের নির্মান কাজ চলমান রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই এসব কাজ সম্পন্ন হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষে রেল চলাচল শুরু হলে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

ট্রানজিট সুবিধার আওতায় মোংলা বন্দর থেকে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত এবং নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহনে সাশ্রয় ও সহজ করতে খুলনার ফুলতলা রেলস্টেশন থেকে মোংলা বন্দর জেটি পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের প্রকল্পটির নির্মান কাজ শুরু হয় ২০১০ সালে।

২০১৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। এরপর দুই দফা সময় বাড়িয়ে সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রেল পথটি নির্মান শেষ করনার কথা ছিলো। কিন্তু গত বছরের ডিসেম্বার পর্যন্ত ওই প্রকল্পের কাজের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে ৭৫ কিলোমিটারের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়। বাকি থাকে আরও ১৫ কিলোমিটার রেলপথের কাজ।

এজন্য চলতি বছরের জুন পর্যন্ত আরও ছয় মাস প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। এরপর আরেক দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও প্রকল্পের কাজে আর কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক মো.আরিফুজ্জামান জানান,, খুলনা-মোংলা রেলপথের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে ইতিমধ্যে ৮৭ কিলোমিটারের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে বাকি রয়েছে মাত্র তিন কিলোমিটার রেলপথ ও কিছু ফিনিশিংয়ের কাজ। আশা করা হচ্ছে, এই স্বল্প কাজও দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ হবে। কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাক না ঘটলে আগামী মাসের (সেপ্টেম্বর) শেষের দিকে এ রেলপথ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা সম্ভব হবে।

মোংলা নাগরিক সমাজের আহবায়ক মোঃ নুর আলম শেখ বলেন, মোংলা-খুলনা রেলপথ চালু হলে মোংলা বন্দরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

রেলওয়ে প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মোংলা-খুলনা রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রথম দফায় প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রথম সংশোধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।

দ্বিতীয় দফা সংশোধনের পর সর্বশেষ ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়। সেই সঙ্গে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর নির্মাণকাজ করেছে। বাকি কাজ করেছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল। প্রকল্পটির কাজ তিনটি ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে রয়েছে রূপসা নদীর ওপর রেল সেতু নির্মাণ, মূল রেললাইন স্থাপন এবং টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং স্থাপন। শুরু থেকেই প্রকল্পটি নানা ধরনের বাধার মুখে পড়ে। তিন বছর মেয়াদের কাজটির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দিতে সময় লাগে দুই বছর।

সূত্রমতে, তিন বছর মেয়াদের প্রকল্পটি ধীরগতির কাজের কারণে ব্যয় বেড়ে ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা থেকে ৪ হাজার ২৬০ কোটি টাকা হয়েছে। দুই দফায় প্রকল্প সংশোধনের কারণে এই ব্যয় বেড়েছে ২ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। তবে, তৃতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন