জাতীয় ডেস্ক :
বরিশালে হলিকেয়ার নামে একটি মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে চন্দন সরকার (২৪) নামে এক রোগীকে নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা। এদিকে নিরাময় কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
তবে কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে? সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাতে পারেননি তারা। এদিকে পুলিশ বলছে, তদন্ত করে এ ব্যাপারে নেওয়া হবে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা।
মৃত চন্দন সরকার জেলার আগৈলঝাড়া বড়পাইকা গ্রামের প্রয়াত চিত্ত রঞ্জন সরকারের ছেলে। গত ৭ আগস্ট তাকে ওই কেন্দ্রে ভর্তি করেন পরিবারের সদস্যরা। এর ৬ মাস আগে আগৈরঝাড়া থানা থেকে তাকে একবার এই নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় প্রায় তিন মাস সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
চন্দনের মামা নিবাস মহুরি জানান, তার ভাগনে চন্দন দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন করত। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে তাকে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনোভাবেই মাদক সেবন বন্ধ করানো যাচ্ছিল না। এ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য বরিশাল নগরীর নবগ্রাম রোডের হলিকেয়ার মাদকাসক্তি চিকিৎসা সহায়তা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) ভোর রাতে মুঠোফোনের মাধ্যমে চন্দনের মৃত্যুর খবর পান তারা।
কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন চন্দন। তবে বিষয়টি বিশ্বাস হয়নি চন্দনের স্বজনদের। তাদের অভিযোগ নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
এদিকে ওই নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অন্যান্যরা সাংবাদিকদের জানান, তাদেরকে প্রায়ই নির্যাতন করা হয়। এখানকার চিকিৎসার অংশই নির্যাতন।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হলিকেয়ারের সেন্টার ইনচার্জ মো. মাইনুল হক তমাল। তিনি দাবি করেন, হলিকেয়ারে কাউকে মারধর বা নির্যাতন করা হয় না। চন্দনের মৃত্যুকে হত্যা নয় বলে দাবি করে তমাল আরও বলেন, সে গলায় গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
শুক্রবার ছিল অভিভাবকদের দেখা করার নির্ধারিত দিন। বেশ কয়েকজন অভিভাবক আজ দেখা করার জন্য সেখানে গেলে এই মৃত্যুর খবর শুনে চিকিৎসাধীন ২ জনকে সেখান থেকে নিয়ে যান স্বজনরা।
এ ব্যাপারে আলাপকালে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আলী আশরাফ ভূঁইয়া বলেন, চন্দনের মরদেহ মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এ ঘটনা তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগেও বরিশালের বিভিন্ন মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে নির্যাতনে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে।