জসিম উদ্দিন:
বনবিনাশী রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ এবং বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন করতে পারলে সুন্দরবন ভাল থাকবে। কোন ধরনের বৈজ্ঞানিক গবেষণা ছাড়াই সুন্দরবনের চারপাশে শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমতি দেয়া হচ্ছে। যার ফলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র হুমকিতে আছে। রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা দূষণে সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদীর পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে। বনবিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে মায়ের মতো সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে।
১৪ ফেব্রয়ারী শুক্রবার ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), একশন এইড বাংলাদেশ, সুন্দরবন রক্ষায় আমরা, রিভার ওয়াটারকিপার, মোংলা নাগরিক সমাজের আয়োজনে এ র্যালী ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত ”বাঁচাও সুন্দরবন” শীর্ষক র্যালী শেষে পৌরসভা চত্বরে সমাবেশে বক্তারা একথা বলেন।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মোংলা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ। প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর সদস্য সচিব ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’র সমন্বয়কারী শরীফ জামিল। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন সাবেক পৌর কাউন্সিলর এমরান হোসেন, সুন্দরবন জাদুঘরের পরিচালক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, আমরা’র গীতিকার মোল্লা আল মামুনসহ অনেকে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এর সদস্য সচিব শরীফ জামিল বলেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ক্ষয়িষ্ণু সুন্দরবনের সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাতে হচ্ছে বলে, ব্ড়াতি মানসিক চাপ অনুভব করছি। সুন্দরবনের সন্নিকটে এখনো চলছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বেপরোয়া শিল্পদূষণ। জাতিসংঘের অনুরোধ সত্তে¡্ও এ অঞ্চলের জন্য এখনও নিশ্চিত করা যায়নি একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষা। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে সুন্দরবন ও বনজীবিদের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। বনবিভাগের দুর্নীতি বেড়ে যাওয়া সুন্দরবনের জেলে-ব্ওায়ালী-মাওয়ালীদের ঘরে ঘরে আতংক আর কান্নার মাতম। আমরা সুন্দরবন রক্ষায় দৃম্যমান পদক্ষেপ ও অগ্রগতি দেখতে চাই।
সভাপতির বক্তব্যে মোংলা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মোঃ নূর আলম শেখ বলেন সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনে হরিণ শিকার ও বন্যপ্রাণী অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, বিষপ্রয়োগে মাছ নিধন , বৃক্ষনিধন ও বন্যপ্রাণী হত্যা বন্ধ করতে করতে না পারলে মায়ের মতো সুন্দরবনকে রক্ষা করা যাবেনা।
সুন্দরবন দিবসের অন্যান্য কর্মসুচির মধ্যে ছিলো বিকেল ৩টায় মোংলা পৌর শহীদ মিনারে ”সুন্দরী শ্যামলিমা সুন্দরবন” শীর্ষক শিশু চিত্রাংকণ ও রচনা প্রতিযোগিতা, বিকেল ৪টায় ”পরাণের সুন্দরবন” শীর্ষক আলোচনা সভা, বিকেল ৫টায় ”বাঘের বাচ্চা” শীর্ষক বাঘ মহড়া ও সুন্দরবন অঞ্চলের জনপ্রিয় লাঠিখেলা। সবশেষে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান হয়।