আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফ্রিকার দেশ সুদানের দক্ষিণ কর্দোফান প্রদেশে একটি কিন্ডারগার্টেনসহ একাধিক স্থানে আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) হামলায় অন্তত ১১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৪৬জনই শিশু। এতে আহত হয়েছেন আরও ৩৮ জন।
আল–জাজিরার প্রতিবেদন অনযায়ী, গত বৃহস্পতিবার এ হামলার ঘটনা ঘটে সাউথ করদোফান রাজ্যের কালোগিতে। কালোগির নির্বাহী পরিচালক অন্তত ৭১ জন নিহত হওয়ার খবর জানান।
এর আগে গত শুক্রবার দিনের শেষে সুদানের চিকিৎসকদের জোট সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক এক বিবৃতিতে জানায়, ঘটনাস্থলে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে দ্বিতীয়বারের মতো হামলা হয়েছে।
দক্ষিণ কর্দোফান রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পশ্চিম সুদানের কালোগি শহরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে চারজন নারীও রয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, আরএসএফের ড্রোন থেকে মোট চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যা একটি কিন্ডারগার্টেন (শিশু বিদ্যালয়), একটি হাসপাতাল এবং শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আঘাত হানে। রাজ্য সরকার এই ঘটনাকে আরএসএফ-সমর্থিত সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট-নর্থ দ্বারা সংঘটিত একটি ‘জঘন্য অপরাধ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
প্রথমদিকে রাজ্য সরকার জানায়, হামলায় ছয় শিশু ও একজন শিক্ষকসহ মোট আটজন নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে পরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৯ জনে পৌঁছায়।
দক্ষিণ কর্দোফান রাজ্য সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, এসব সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে, আরএসএফকে একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে এবং তাদের মিত্রদের এই ‘অমানবিক অপরাধের’ জন্য জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
এক বিবৃতিতে হামলাটিকে শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের এক ভয়াবহ উদাহরণ বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। ইউনিসেফ জানায়, নিহতদের মধ্যে ৫ থেকে ৭ বছর বয়সি ১০ জনেরও বেশি শিশু রয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান সেনাবাহিনী ও আরএসএফ-এর মধ্যে শুরু হওয়া এই গৃহযুদ্ধ ইতোমধ্যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুসারে, এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০ হাজার মানুষ এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ।
