আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সুদানে চলমান সংঘাতের মধ্যে জাতিসংঘ মিশনের প্রধান ভলকার পার্থেসকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। সংঘাত উসকে দেয়ার অভিযোগে সেনা সমর্থিত সুদানি কর্তৃপক্ষ তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। খবর আল জাজিরার।
কয়েক সপ্তাহ আগেই সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান জাতিসংঘ দূতের বিরুদ্ধে সংঘাত উসকে দেয়ার অভিযোগ আনেন এবং তার অপসারণ দাবি করেন।
এরপর গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, সরকার জাতিসংঘ মহাসচিবকে অবহিত করে ঘোষণা করছে যে, ‘আজ থেকে ভলকার পার্থেসকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।’
তবে পার্থেসকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলেও জাতিসংঘ মিশন তার কাজ চালিয়ে যেতে পারবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। সরকারের এই ঘোষণার সময় জাতিসংঘ দূত পার্থেস ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় ছিলেন। সেখানে বেশ কয়েকটি কূটনৈতিক আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, সুদানের সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহান পার্থেসের ওপর দোষ চাপিয়ে যে চিঠি দিয়েছেন, তাতে তিনি দুঃখ পেয়েছেন।
কয়েক বছর অপেক্ষাকৃত শান্ত থাকার পর চলতি বছর এপ্রিলের মাঝামাঝি অনেকটা হঠাৎ করেই সুদানে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের ক্ষমতার একচেটিয়ে দখলে লড়াই করছে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)।
প্রথমে রাজধানী খার্তুম ও এর চারপাশের শহরগুলোতে সংঘাত শুরু হলেও ক্রমেই তা পশ্চিমের দারফুর অঞ্চল পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। এই অঞ্চলেই আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফের উৎপত্তি এবং এখানে তারা নিজেদের প্রভাব বজায় রেখেছে। খার্তুম ও দারফুরের মধ্যবর্তী শহর এল ওবেইদও সংঘাতের শিকার।
এই সংঘাতের কারণে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৮০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও কয়েক হাজার। অভ্যন্তরীণভাবে উদ্বাস্তু হয়েছে ৪ লাখের বেশি বেসামরিক নাগরিক। ১২ লাখের বেশি মানুষকে খার্তুম ও অন্যান্য শহর থেকে বিতাড়িত হয়েছে। কমপক্ষে ১ লাখ ৭৫ হাজার মানুষ মিশরে আশ্রয় নিয়েছে।
সংঘাত শুরুর পর উভয় পক্ষ বেশ কয়েকবার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও তার কোনোটাই কার্যকর হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের পৃষ্ঠপোষকতায় চলতি সপ্তাহে নতুন করে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরু হয়েছে।