হোম রাজনীতি সিলেটে ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ২

রাজনীতি ডেস্ক:

সিলেটে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে আরিফ (১৯) নামের এক ছাত্রলীগের কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের কর্মীরা।

সোমবার (২০ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে নগরীর বালুচরের টিভি গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হত্যার ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বাদ আসর টিভিগেট জামেয়া মসজিদে নিহতের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। পরে মানিকপীরের টিলায় তাকে দাফণ করা হয়।

নিহত ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ নগরের টিভি গেট এলাকার ফটিক মিয়ার ছেলে। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম গ্রুপের সক্রিয় কর্মী বলে জানা গেছে।

ছাত্রলীগের কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা ও ২ জনকে আটকের বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন সিলেটে মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।

আটকরা হলো- বাচ্চু মিয়ার পুত্র রনি (২১) ও কামাল মিয়ার পুত্র মামুন মজুমদার (২৮)। তারা দুজনেই সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপু গ্রুপের কর্মী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিরন মাহমুদ নিপু ও জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি নাজমুল ইসলামের কর্মীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে রোববার (১৯ নভেম্বর) পৌনে ১১টার দিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে রাস্তায় ফেলে যায় আরিফকে। পরে স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। আইসিইউতে ভর্তির পর রাত দেড়টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার বাম হাত, ঊরু ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের ২৩টি আঘাত রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহত আরিফের মায়ের দাবি, কয়েক দিন আগে বালুচর এলাকায় ওয়াকওয়েতে বসা অবস্থায় আরিফকে মারধর করে কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপুর গ্রুপের কর্মীরা। আজ তাদের বিরুদ্ধে শাহপরাণ থানায় মামলা দায়ের করায় আমার ছেলেকে সবাই মিলে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগেও আরিফের ওপর বালুচর এলাকায় হামলা চালায় কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী। যারা দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে মানুষকে নির্যাতন করছে, তারাই আজ আরিফকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।

আরিফের হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, এ ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা কথা বলছেন এবং প্রশাসন যদি আসামি না ধরেন তাহলে আমরা কর্মসূচি দেব। নিহতের পরিবার থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কাউন্সিলর হিরণ মাহমুদ নিপুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সিলেট এয়ারপোর্ট থানার ওসি মঈন উদ্দিন সিপন কালবেলাকে বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। নিহত আরিফের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন