আসাদুজ্জামান :
প্রতিপক্ষের হামলায় পণ্ড হয়েগেছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা। ফলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা স্থগিত করা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য সাতক্ষীরা সদর ২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি কে দায়ী করা হয়েছে।
রবিবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ওই সভা আহ্বান করেছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান আলী। উক্ত বর্ধিতসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদের এবং প্রধান বক্তা হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলামের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করার কথা ছিল সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ আব্দুর রশিদের।
সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত হওয়ার জন্যে আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহান আলী। আমন্ত্রণ পেয়ে সদর উপজেলারর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা বর্ধিত সভায় আসতে শুরু করেন। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে সবই ঠিকঠাক চলছিল। এরই মধ্য হঠাৎ মঞ্চে আবির্ভূত হয় একটি গ্রুপ। তারা কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ব্যানার ছিড়ে তছনছ করে এবং চেয়ার ছুড়াছুড়ি করে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বর্ধিত সভা স্থগিত করেন সভার আহ্বানকারীরা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ আব্দুর রশিদ।
তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ বর্ধিত সভায় নগ্ন হামলা চালিয়েছে সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলামের লোকজন। ফলে দলের সিনিয়র নেতাদের সাথে আলোচনা করে বর্ধিত সভা স্থগিত করা হয়েছে।
একই কথা বলেন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক শেখ মনিরুল হোসেন মাসুম। তিনি বলেন, বর্ধিত সভার অতিথিগণ মঞ্চে যাওয়ার আগেই সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলামের লোকজন হামলা চালিয়ে ব্যানার ছিড়ে ফেলে এবং চেয়ার ছুড়াছুঁড়ি করে। এতে পন্ড হয়ে যায় বর্ধিত সভার আয়োজন। পরে সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মদিনের কেক কাটেন সাতক্ষীরা সদর-এমপি, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহান আলী, সাবেক সভাপতি এসএম শওকত হোসেনসহ অন্যান্যরা।
এদিকে, অপর একটি সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক গ্রুপের আহবানকৃত বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দু’গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। সূত্রটি জানায়, সম্মেলনে নির্বাচিত সভাপতি আবুল খায়েরের মৃত্যুতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোননয়কে ঘিরে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগে বিভক্তি শুরু হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কর্তৃক শেখ আব্দুর রশিদকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঘোষণা করে পত্র দিলেই সহ-সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ করেন। দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে নেতা-কর্মীরা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। দু’গ্রুপই জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে পাল্টা-পাল্টি সভা ডাকে। পরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ আব্দুর রশিদের আহবানকৃত সভাটি হয় শহরের লেকভিউ মিলনায়তনে। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম। অপরদিকে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে সহ-সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলামের আহবানকৃত সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু। এভাবে
জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোনয়নকে ঘিরে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন অনেকেই।