নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক গ্রুপের আহবানকৃত আজকের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে বিবাদমান গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। সম্মেলনে নির্বাচিত সভাপতি আবুল খায়েরের মৃত্যুতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোননয়কে ঘিরে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগে বিভক্তি শুরু হয়।
তথ্যানুসন্ধানের জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুর রশিদকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ঘোষণা করে পত্র দিলেই বিপত্তি দেখা দেয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনকে কেন্দ্র করে গ্রুপের মুখোমুখি অবস্থান নেয়। দুই গ্রুপ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে পাল্টা-পাল্টি সভা ডাকে। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ আব্দুর রশিদের আহবানকৃত সভাটি হয় লেকভিউ মিলনায়তনে। সেখানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম। অপরদিকে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলামের আহবানকৃত সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা সদর ২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু সহ তাদের অনুসারী নেতা-কর্মী।
জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোনয়নকে ঘিরে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মোঃ শহিদুল ইসলাম। তবে
সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের কমিটি ঘোষনার পর এক নম্বর সিনিয়র সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম পদত্যাগ পত্র জমাদেন। সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবুল খায়েরের মৃত্যু হলে এই সুযোগে দুই নম্বার সহ সভাপতি আব্দুর রশিদকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোনিত করা হয়। ফলে ঘটে যায় বিপত্তি । পদত্যাগ করার পর ও শহিদুল ইসলাম বলতে চান, তার পদত্যাগ যথাযথ ভাবে গৃহীত হয়নি। তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দাবিদার। তবে জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ বলতে চান, যেহেতু এক নম্বর সহ সভাপতি পদত্যাগ করেছেন সে কারনে নিয়ম অনুযায়ি সভাপতির মৃত্যুর পর দুই নম্বর সহ-সভাপতি আব্দুর রশিদ কে নিয়ম অনুযায়ি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনোনিত করা হয়েছে।
এদিকে দুই গ্রুপই তাদের অস্তিত্ব ঠিক রাখতে মাঠে নেমেছে। শেখ আব্দুর রশিদ গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী কর্তৃক সম্প্রতি বর্ধিত সভার পত্র প্রস্তুত করে। এ খবর জানতে পেরে তাৎক্ষনিক ভাবে গত সেপ্টেম্বরে সাতক্ষীরা বাসটার্মিনালের মালিক সমিতির সভাকক্ষে মোঃ শহিদুল ইমলামের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কয়েক জন সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোরশেদ বক্তব্য দেন। আলোচনা শেষে তারা সিদ্ধান্ত নেন শেখ আব্দুর রশিদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারা মানেন না। এবং তার সভাপতিত্বে বর্ধিত সভা আহবান করা হলে যেকোন মূল্যে তা প্রতিহত করা হবে।
সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা বি এম মোজাম্মেল হক চলমান জটিল পরিস্থিতিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদকে ফোন দিয়ে আজকের আহবানকৃত বর্ধিত সভাটি বাতিল করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু আজ শাহজাহান আলী কর্তৃক আহবানকৃত বর্ধিত সভা জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে হতে যাচ্ছে। অপরদিকে সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ শহিদুল ইসলামের গ্রুপ গভীর রাত পর্যন্ত শহরের এক শীর্ষ নেতার বাসায় দীর্ঘ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শাহজাহান আলী’র আহবানকৃত বর্ধিত সভার কোন বৈধতা নেই। ফলে এ ধরনের সভা হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
এদিকে, শাহজাহান আলী’র আহবানকৃত বর্ধিত সভায় বিতরণকৃত কার্ডে অতিথি করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নজরুল ইসলামকে। পাশাপাশি ব্যানারে সাতক্ষীরা সদর ২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকে অতিথি করা হয়েছে। সর্বশেষ একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে জেলার শীর্ষ নেতাদের হস্তক্ষেপে আহবানকৃত সভাটি হতে যাচ্ছে। তবে সভায় দুই গ্রুপই মুখোমুখি অবস্থান নিবে এতে কোন সন্দেহ নেই।