নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরা জেলা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. আব্দুল লতিফ (৫৮) এবং তার ছেলে রাসেলকে (৩৫) হত্যা ও অপহরনসহ চাঁদাবাজির দুটি মামলায় সাতক্ষীরার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করেছে সদর থানা পুলিশ। শনিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এর বিচারত তাদেরকে জেলহাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা নং-১২ তারিখ-০৩.০৯.২৪ এবং মামলা-২৩, তারিখ-২৩.০৯.২৪। এর আগে, অ্যাড. আব্দুল লতিফ ও তার ছেলেকে শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে খুলনা শহরের বয়রা এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স¤প্রতি অ্যাড. আব্দুল লতিফ সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুরের তার পাঁচতলা বাড়িটি ফ্ল্যাট আকারে বিক্রি শুরু করেন। কমিশন করে সাতক্ষীরার সাব-রেজিস্ট্রারকে খুলনার বয়রা এলাকায় নিয়ে তিনি ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি করছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি জানতে পেরে সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল বয়রা এলাকার ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অ্যাড. আব্দুল লতিফ ও তার ছেলে রাসেলকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের সাতক্ষীরা ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সদর থানায় সোপর্দ করা হয়। জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে অ্যাড. আব্দুল লতিফের বিরুদ্ধে আটটি হত্যা, অপহরনসহ চাঁদাবাজি ও নাশকতার মামলা এবং তার ছেলে রাসেলের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের হয়। এরপর তারা সাতক্ষীরা থেকে পালিয়ে খুলনার বয়রা এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বে বিডিআর থেকে দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত হওয়ার পর রাজনৈতিক প্রভাব ও পিপি পদে থাকার সুবাদে আব্দুল লতিফ আদালতপাড়া ও সীমান্তর্তী এলাকায় ভারতীয় গরুর খাটাল পরিচালনা সংক্রান্ত কর্মকান্ডর মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হন। ওই অর্থ দিয়ে তিনি রসুলপুর এলাকায় পাঁচতলা বিশাল ভবন নির্মাণ করেন। স¤প্রতি ভবনটি ফ্ল্যাট আকারে বিক্রি করতে গিয়ে তারা সাতক্ষীরায় আসতে না পেরে কমিশনের মাধ্যমে সাতক্ষীরা সদরের সাব রেজিস্ট্রারকে খুলনার বয়রা এলাকায় নিয়ে যান। অভিযোগ রয়েছে, ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি করাতে বিশেষ সুবিধা হিসেবে তারা সাব রেজিস্ট্রারকে ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। এ কাজে দলিল লেখক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন সদর দলিল লেখক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম।
এ মমামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানা পুলিশের এসআই আল আমিন জানান, হত্যা ও অপহরনসহ চাঁদাবাজির দুটি মামলায় আজ শনিবার আব্দুল লতিফ ও তা ছেলে রাসেলকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-১ এ সোপর্দ করা হলে আদালত তাদের জেল হাজতে প্রেরনের নির্দেশ দেন।
