নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে নেশার টাকা জোগাড় করতে এক মাদকাসক্ত যুবকের বিরুদ্ধে ৯ বছরের কন্যা শিশুর স্বর্ণের দুল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় সন্দেহজনক ভাবে আটক মাদকাসক্ত যুবক রেজোয়ান কবির জনি পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেছে। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কনফারেন্স রুমে এক প্রেস ব্রিফিং এ জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম মুনীর।
ঘটনাটি ঘটেছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আগরদাড়ি গ্রামে। নিহত স্কুল ছাত্রী নুসরাত জাহান রাহি (৯) আগরদাড়ি গ্রামে রবিউল ইসলামের মেয়ে। অভিযুক্ত রেজোয়ান কবির জনি (২২) একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক সরদারের ছেলে।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, রেজোয়ান কবির জনি ইতিপূর্বে ঢাকার একটি লিফট কোম্পানীতে চাকুরী করতো। চাকুরী করা কালীন একটি মেয়ের সাথে সম্পর্ক করে ৯ (নয়) মাস আগে বিয়ে করে। বিগত ৪/৫ মাস আগে জনির চাকুরীটি চলে যাওয়ায় সে ঢাকা থেকে বাড়িতে চলে আসে। জনির চাকুরী না থাকার কারণে সে অর্থনৈতিক সমস্যায় ভুগতেছিল এবং নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। তার পিতার নিকট বিভিন্ন সময় টাকা চেয়ে না পেয়ে সে বিকল্প চিন্তা করে। তখন তার প্রতিবেশী ভিকটিম নূসরাত জাহান রাহি’র কানে থাকা স্বর্ণের এক জোড়া রিং এর কথা মনে পড়ে।
তিনি বলেন, শনিবার সকালে ভিকটিম নূসরাত জাহান রাহি তার বান্ধবী মিতা বসু (৮) এর বাড়ীর সামনে খেলা করছিল। সে সময় জনি ভিকটিমকে মোড়ে যাওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে যাওয়ার সময় মাওলানা মোঃ সোলাইমান আজিজীর পুকুরের পাশে যেয়ে আসামী ভিকটিমকে বলে চলো আমরা হলুদ তুলতে যাই। তারপর হলুদ ক্ষেতে গিয়ে ভিকটিমের কানে থাকা স্বর্ণের রিং জোড়া হাত দিয়ে খুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। ভিকটিম স্বর্ণের রিং জোড়া দিতে অস্বীকার করে এবং বাড়ীতে গিয়ে বাবা-মাকে বলে দিতে চায়। একপর্যায়ে আসামী রেজোয়ান কবির জনি ভিকটিম নূসরাত জাহান রাহির কানে থাকা স্বর্ণের কানের রিং জোড়া জোরপূর্বক খুলে নেয় এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর ভিকটিমের মরদেহ যেন কেউ খুজে না পায় তার জন্য ভিকটিমের গায়ে থাকা গেঞ্জি ছিড়ে হাত এবং পা বেধে হলুদ ক্ষেতের পাশে পুকুরের মধ্যে ফেলে দেয়।
তিনি আরো বলেন, আসামী জনি কানের রিং জোড়া নিয়ে সেটি বুধহাটা বাজারে যেয়ে পলাশ জুয়েলার্স এর দোকানে অজয় পাইনের কাছে নয় হাজার টাকায় বিক্রি করে। ইতিমধ্যে স্থানীয় লোকজন নূসরাত জাহান রাহির মরদেহ পুকুরে দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দিলে থানা পুলিশ দ্রæততম সময়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এরপর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে থানা পুলিশ আসামী রেজোয়ান কবির জনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোবাবর থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে রেজোয়ান কবির জনি সকল ঘটনা পুলিশকে খুলে বলে এবং ভিকটিমকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তিনি আরো জানান, আজ সোমবার তাকে হত্যা মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হবে।