হোম খুলনাসাতক্ষীরা সাতক্ষীরায় সাবেক এমপি ও তার পিতার বাড়িতে ভাংচুর

সাতক্ষীরায় সাবেক এমপি ও তার পিতার বাড়িতে ভাংচুর

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 32 ভিউজ

নিজস্ব প্রতিনিধি:

ছাত্র শিবিরের নেতাদের মারধর করার অভিযোগে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আতাউল হক দোলন ও তার পিতা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক ও সংসদ সদস্য এ, কে ফজলুল হকের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত শ্যামনগর উপজেলার গুমনতলী গ্রামে এমন ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও শ্যামনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে দুইপক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় গোটা এলাকাজুড়ে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্র শিবিরের ২০-২২ জন নেতাকর্মী দাওয়াতী কাজের জন্য আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আতাউল দোলনের বাড়ি সংলগ্ন গুমনতলী ফাযিল মাদ্রাসায় যায়। এরপর ছাত্রশিবিরের নেতাদের দাওয়াতী কাজে মাদ্রাসায় আসার বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় গ্রামবাসী ও মাদ্রসার ছাত্ররা সংঘবদ্ধ হয়ে লাঠিশোটা নিয়ে তাদের মারপিট করে। একপর্যায়ে শিবিরের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এসময় গ্রামবাসীদের হামলায় আহত উপজেলা ছাত্র শিবিরের সাহিত্য সম্পাদক আসাদুল্লাহ সাঈদী(১৯), মহসীন কলেজ সেক্রেটারি আল শাহরিয়ার রোকন(১৭), পৌর সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ আল সিয়াম(১৬)সহ শিবির কর্মী মিরাজকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, নেতাকর্মীদের উপর হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিবিরের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী উপজেলা সদরে জড়ো হয়। সেখান থেকে তারা প্লাষ্টিকের পাইট ও লাঠিশোটাসহ তারা বিক্ষোভ মিছিল সহকারে গুমনতলী গ্রামে যেয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আতাউল হক দোলন ও তার পিতা সাবেক সংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে ফজলুল হকের বাড়ি দুইটিতে হামলা চালায়। একপর্যায়ে বাড়ি দুইটিতে ব্যাপক ভাংচুর চালানোর পাশাপাশি হামলাকারীরা ফজলুল হকের কক্ষগুলোতে ঢুকে যাবতীয় জিনিসপত্র তছনছ করে। ঘটনায় সময় আতাউল হক দোলন ও তার পিতা ফজলুল হক বাড়িতে ছিলেন না।

ছাত্রশিবিরের সভাপতি রাশিদুল ইসলাম বলেন, সংগঠনের দাওয়াতি কাজে যাওয়ার পর বিনা উস্কানীতে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্যের ছেলে ফাহিম রাব্বির নির্দেশে নেতৃবৃন্দের উপর হামলা হয়। এসময় গুরুত্বপুর্ন কাগজপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নেতৃবৃন্দকে মারাত্বকভাবে আহত করা হয়। সংগঠনের ১৬ নেতাকর্মী আহত হওয়ার দাবি করে তিনি আরও বলেন নেতৃবৃন্দের উপর হামলার খবরে কিছু উত্তেজিত জনতা বিকালের দিকে হামলার নেতৃত্বদানকারী ফাহিম রাব্বির বাবা ও দাদার বাড়িতে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এঘটনায় তারা শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেবেন।

আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সদস্য আতাউল হক দোলন জানান, শিবিরের কিছু কর্মী তাদের বাড়ির পার্শবর্তী গুমনতলী কামিল মাদ্রাসায় গেলে স্থানীয় গ্রামবাসি ও মাদ্রসার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় তার ছোট ছেলে ফাহিম রাব্বি এলাকার বর্ষিয়ানদের নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। অথচ তার ছেলের নেতৃত্বে শিবির কর্মীদের মারধরের অভিযোগ তুলে ৩০০-৪০০ শতাধিক জামাত -শিবিরের লোকজন বিকেলে দিকে তাদের দুইটি বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে। এসময় তিনটি মটর সাইকেল ও একটি ব্যক্তিগত গাড়িসহ বাড়ির আসবাবপত্র পর্যন্ত ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।এছাড়া তার বৃদ্ধ পিতার শয়নকক্ষে ঢুকেও হামলকারীরা ব্যাপক লুটতরাজ করেছে।

শ্যামনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফকির তাইজুর রহমান বলেন, গতকাল দুপুরের দাওয়াতি কাজে গুমনতলী কামিল মাদ্রসায় গেলে ছাত্রলীগের সদস্যরা তাদের মারধোর করে। এতে চারজন আহত হয়। হামলার ঘটনায় আহত শিবির কর্মীদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওই সময় পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও হঠাৎ বিকেলের দিকে উত্তেজিত শিবির কর্মী আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও তার পিতার বাড়িতে ভাংচুর করে। খবর পেয়ে দ্রুত সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করা হয়। এঘটনায় কোন পক্ষ রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত থানায় লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি বলেও তিনি জানান। এঘটনায় ছাত্র শিবিরের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়েছে। সাবেক দুই এমপির বাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় কেউ থানায় এখনও অভিযোগ দেয় নি।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন