নিজস্ব প্রতিনিধি:
তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। রবিবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের ব্রজপাটুলি গ্রামের আজগার আলীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম তুহিন এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। ২০২১ সালের ২০ মার্চ দেবহাটার আস্কারপুর গ্রামের নূর হোসেনের মেয়ে আকলিমা খাতুনের সাথে দেড় লাখ টাকা কাবিনে তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। আলিফ হাসান নামে তাদের তিন বছরের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। তার (তুহিন) বাবা ও মাকে বাড়িতে রেখে তাকে নিয়ে তার স্ত্রী অন্যত্র বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে বললে তিনি রাজী হননি। এ নিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই বিরোধ লেগে থাকতো। একপর্যায়ে ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর স্ত্রী আকলিমা একমাত্র সন্তান আলিফকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যায়। যাওয়ার সময় সে সংসার করবে না বলে যায়। বিষয়টি নিয়ে তিনি শ^শুরবাড়ির লোকজনকে অবহিত করেও লাভ না হওয়ার একপর্যায়ে তিনি ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর কাবিনের এক লাখ ৬০ হাজার টাকাসহ ডাকযোগে স্ত্রীকে তালাকনামা পাঠান। সে তালাকনামা না গ্রহণ করে ওই বছরের ৩ ডিসেম্বর সাতক্ষীরার আমলী আদালত-৭ এ তাকে, তার মা রাজিয়া বেগম ও ভগ্নিপতি লাভলু মোল্লার নাম উল্লেখ করে যৌতুক আইনে সিআর-২৫৫/২৩ নং মামলা দায়ের করে। মামলায় তার কাছে নগদ টাকা ও মালামালসহ আট লাখ ৫৫ হাজার ২১১ টাকা দাবি করে। ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি‘২৫ আদালত তাদেরকে ওই মামলা (টিআর-৯৯/২৪) থেকে খালাস দেয়। ওই মামলা থেকে খালাস পাওয়ার আগেই আকলিমা তার নামে ২০২৪ সালের ২১ মার্চ পারিবারিক আদালতে ৬/২৪ নং মামলা করে। পারবিবারিক মামলায় আদালত তার বিরুদ্ধে গত বছরের ৩০ অক্টোবর এক লাখ ৬৮ হাজার টাকা রায় ও ডিক্রি জারি করে। একইসাথে ছেলেকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশনা দেয়। পরবর্তীতে ০৪/২৫ নং জারি মামলায় আদেশ অনুযায়ি তিনি আদালতে ওই টাকা পরিশোধ করেন। ছেলেকে প্রতি মাসে টাকা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয় পারিবারিক মামলা শেষ হওয়ার আগেই আকলিমা তার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পিটিশন-১৪৪/২৪ নং মামলা করে। আগামি ৯ এপ্রিল‘২৫ আদালত হাসপাতালের ডাক্তারি সনদ প্রাপ্তির জন্য দিন ধার্য আছে। এরপরও তাকে হয়রানি করতে আকলিমা তার কাছে ফ্রিজ ও শোকেসসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দাবি করে কালিগঞ্জ থানায় মিথ্যা অভিযোগ করে। থানার উপ-পরিদর্শক জাহিদ হোসেন গত ১৬ মার্চ তাকে তার কর্মস্থল থেকে ডেকে থানায় নিয়ে যায়। তিনি আকলিমার অভিযোগের কপি তার কাছে বা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে চাইলে তারা না দিয়ে জিনিসপত্র দিয়ে দিতে বলেন। তিনি যৌতুকের মামলাসহ সকল মামলার বিবরণ পুলিশ কর্মকর্তাদের অবহিত করলেও পুলিশ আকলিমার সাথে বিশেষ সম্পর্ক তৈরি করে তাকে হয়রানি করে চলেছে। এমনকি গত ২৭ মার্চ‘২৫ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে মোবাইল ফোনে থানায় তার সঙ্গে দেখা করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন। এমতাবস্থায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী আকলিমা খাতুন ও পুলিশের হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট