নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরায় কাথন্ডায় পারিবারিক কলহের জেরে এক গৃহবধুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সকালে গৃহবধুকে হত্যা করে ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে আত্মহত্যার প্রচার দেয় তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় মামলা নিতে গড়িমসি করার অভিযোগ উঠেছে সদর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মৃত্যু বরণকারি গৃহবধুর নাম সুমি খাতুন (২৩)। তিনি সদর উপজেলার কাথন্ডা গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের স্ত্রী ও তেতুলতলা গ্রামের শফিকুল ইসলামের একমাত্র কন্যা। তাদের ৪ বছর বয়সী জান্নাত নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
সুমি খাতুনের পিতা শফিকুল ইসলাম জানান, বছর ছয়েক আগে তার একমাত্র কন্যা সুমি খাতুনের সাথে কাথন্ডা গ্রামের মৃত আবু বকর সরদারের ছেলে সাদ্দাম হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিসহ বিভিন্ন তুচ্ছ ঘটনায় তার কন্যার উপর ব্যাপক নির্যাতন চালাতো স্বামী সাদ্দাম হোসেন, ভাশুর শাহিন আলম, জা সিনথিয়া খাতুন ও ননদ মিনা খাতুন। সুমি শ্বশুর বাড়িতে টিকতে না পেরে এক পর্যায়ে আমার বাড়িতে চলে আসে। এরপর গত পহেলা রমজানে জামাই সাদ্দাম হোসেন আমার বাড়িতে এসে আমার কন্যাকে নিয়ে তাদের বাড়িতে চলে যায়। আজ শুক্রবার সকালে মেয়ের ভাশুর শাহীন আলম সুমি আত্মহত্যা করেছে বলে খবর দেয়।
সুমির খালু সদর উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের রবিউল ইসলাম জানান, আমরা সাদ্দামদের বাড়িতে যেয়ে সুমিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। ঘরের মধ্যে কোনো চেয়ার বা টুল এ ধরনের কিছুই পাইনি। আত্মহত্যা করতে গেলেতো উচু কিছুতে উঠতে হবে সে ধরনের কিছু সেখানে পাওয়া যায়নি। এছাড়া গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার প্রাথমিক কোন লক্ষণ সুমির মধ্যে ছিলনা। তিনি আরো জানান, পুলিশের সামনেই সুমির ননদ মিনা খাতুন আমাদের সাথে আস্ফালন করতে থাকেন। তিনি থানা বা আদালতের বারান্দায় না উঠতে প্রয়োজনে ৫ লাখ টাকা খরচ করবেন বলে চিৎকার করতে থাকেন।
মেয়ের আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা দিতে গেলে সদর থানার ওসি কর্তৃক মামলা নিতে গড়িমসি করার অভিযোগ করেছেন সুমির পিতা শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা এজাহার দিতে থানায় গেলেও ওসি সাহেব বলেন, মেয়ে তো আত্মহত্যা করেছে, মামলা দিয়ে কি হবে ?
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির জানান, আমি নিশ্চিত এটা আত্মহত্যা। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগে সুরতহাল রিপোর্ট দেখে আত্মহত্যা বলা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান। মামলা গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, আচ্ছা, উনারা আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দিক, দেখি কি করা যায়।