নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিকালে র্যাবের হাতে আটক হওয়া পুলিশের উপ-পরিদর্শক ও এক পৌর কাউন্সিলরসহ ৫ জনকে দুই দিন রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাটকেলঘাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বাবলুর রহমান খাঁন শুক্রবার বিকেলে তাদেরকে সাতক্ষীরা বিচারিক আদালতের বিচারক মোঃ সালাহউদ্দিনের কাছে হাজির করলে তিনি তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদিকে, রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেলেও তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাবে না বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।
রিমান্ড ফেরৎ আসামীরা হলেন, আশাশুনি উপজেলার বড়দল গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীর ছেলে ও যশোর পুলিশ হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন (৪০), যশোরের চৌগাছা গ্রামের মগরেব আলীর ছেলে পৌর কাউন্সিলর মোস্তফা বিশ^াস (৪৬), একই গ্রামের সিরাজ গাজীর ছেলে মাহাবুববর রহমান (২৭), যশোর শহরের বেজপাড়ার গৌর শীলের ছেলে সুজন শীল (২৯) ও একই শহরের কাজীপাড়ার আতিয়ার রহমানের ছেলে শরীফুল ইসলাম (৪২)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে,আসামীরা দীর্ঘদিন গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে সড়ক-মহাসড়কে ছিনতাই করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তারা ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের পাটকেলঘাটা হারুণ-অর-রশিদ কলেজের পাশে অবস্থান নেয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব সদস্যরা একটি প্র্ইাভেট কারসহ ওই পাঁচজনকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় একটি প্রাইভেটকার, একটি মোটরসাইকেল, একটি খেলনা পিস্তল, দুটি পিস্তলের কভার, একটি অকিটকি সেট, দুটি গোয়েন্দা পুলিশের কটি, দুটি হ্যান্ডক্যাপ, দুটি পুলিশ ফিল্ডক্যাপ, একটি পুলিশ বেল্ট, একটি গোয়েন্দা পুলিশের ভূয়া আইডিকার্ড ও একটি পিস্তল বাঁধার চেইন।।
এ ঘটনায় পরদিন খুলনা র্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা শাখার নায়েক সুবেদার আব্দুর রহিম বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে পাটকেলঘাটা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাটকেলঘাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক বাবলুর রহমান খান আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বুধবার রিমান্ড আবেদন শুনানী শেষে বিচারক রাকিবুল ইসলাম তাদের দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৫টায় তাদেরকে আদালত থেকে পাটকেলঘাটা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বাবা আকবর আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা হলেও অতি লোভী ছেলে মোশাররফ হোসেন ছিনতাই ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে তার যশোর শহরে একটি বাড়ি ও খুলনা শহরে দু’টি জমির প্লট রয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাটকেলঘাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক বাবলুর রহমান খাঁন জানান, রিমান্ড শেষে পাঁচ আসামীকে শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেলেও তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলা যাবে না বলে তিনি আরো জানান।