জাতীয় ডেস্ক:
সাগরে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ। কক্সবাজারে ট্রলার ভর্তি এসব ইলিশ নিয়ে ঘাটে ভিড়তেই শুরু হয় কাড়াকাড়ি। জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে এ ইলিশ নিয়ে।
শুক্রবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকাল না হতেই কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর তীরে দেখা যায় সারি সারি ট্রলার। এসব ট্রলার জেটিতে ভিড়তে অপেক্ষা করছেন ব্যবসায়ীরা। ঘাটে আসার পরই ইলিশ নিয়ে শুরু হয় কাড়াকাড়ি। দাম নিয়ে চলে তর্কাতর্কি আর হাঁকডাক। বেশি দাম যার কাছে পাচ্ছেন তার হাতেই জেলেরা তুলে দিচ্ছেন ইলিশ।
জেলেরা বলছেন, সাগরে জাল ফেলতেই ধরা পড়ছে বড় বড় ইলিশ। আর দামও পাওয়া যাচ্ছে বাড়তি।
এফবি নিশান ট্রলারের মাঝি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘অনেক বড় বড় ইলিশ। একেকটির ওজন দেড় কেজির বেশি হবে। অনেক আনন্দ লাগছে এবছর। আমরা সাগরে মাছ ধরে আনন্দ পাচ্ছি, আবার ঘাটে এনে বিক্রি করেও আনন্দ পাচ্ছি।’
এফবি মায়ের দোয়া ট্রলারের জেলে ফিরোজ আলম বলেন, ‘এখন সাগরে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ। তাও আবার অনেক বড়। সাগরে জাল ফেলে এক হাজার বা দুই হাজার ইলিশ পেলেই তা দ্রুত বিক্রির জন্য ঘাটে চলে আসছি। কারণ ইলিশের ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।’
আরেক জেলে ছুরুত মিয়া বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর ইলিশের আকার অনেক বড়। বড় আকারের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায়। আর মাঝারি আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায়।
বেলা ১১টা না বাজতেই কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের ৩টি পন্টুন ইলিশে সয়লাব। পন্টুনে ইলিশ রাখার স্থান না পেয়ে রাখা হচ্ছে খোলা মাঠে। এসব ইলিশ ওজন করে দ্রুত বরফ দিয়ে করা হচ্ছে প্যাকেটজাত। যা সরবরাহ করা হচ্ছে সারা দেশে।
মৎস্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার সুফল পাচ্ছেন তারা।
মৎস্য ব্যবসায়ী জয়নাল বলেন, ‘সরকারি ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর বৈরী আবহাওয়ার কারণে সাগরে আরও একমাস মাছ শিকারে যেতে পারেনি জেলেরা। যার কারণে আমরা যারা মৎস্য ব্যবসায়ী ছিলাম সবাইকে লোকসান গুনতে হয়েছে। কিন্তু এখন নিষেধাজ্ঞার সুফল পাচ্ছি, সাগরে বড় আকারে ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। যার কারণে ইলিশের চাহিদা বেড়েছে আর আমাদের আয়ও বেড়েছে। এখন আমরা লাভের মুখ দেখছি।’
আরেক মৎস্য ব্যবসায়ী আবু বলেন, প্রতিদিনই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পন্টুন ইলিশে ভরে যাচ্ছে। এসব ইলিশ দ্রুত কিনে আমরা সারা দেশে সরবরাহ করছি। বড় আকারের ইলিশের কারণে বাড়তি দাম পেয়ে আমরা ব্যবসায়ীরা খুবই খুশি।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সহ-হিসাব নিয়ন্ত্রক আশীষ কুমার বৈদ্য বলেন, ইলিশ আকারে বড় হওয়ায় লাভবান হচ্ছে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে রাজস্ব আদায়ও বাড়ছে। গেল ১৫ দিনের কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সরবরাহ হয়েছে ৬৬০ মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ। যার মধ্যে ইলিশ রয়েছে ৩৩৪ মেট্রিক টন।