হোম জাতীয় সরকার যেভাবে চাইছে, সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি: সিইসি

সরকার যেভাবে চাইছে, সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি: সিইসি

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 27 ভিউজ

নিউজ ডেস্ক:

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসিরউদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে কমিশন কোনও ধরনের ব্লেম নিতে রাজি নয়। সরকার যেভাবে চাইবে, সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্র্যাসি অ্যান জ্যাকবসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এ এম এম নাসিরউদ্দিন বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর যাতে কোনও ব্লেম (দোষ) না আসে যে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতির অভাব রয়েছে, নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত নয়, প্রস্তুতি সাফিশিয়েন্ট নয়—এই কথা বলে যাতে নির্বাচন নিয়ে কোনও ধরনের কথা না হয়, এ জন্য আমরা পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে থাকবো।

তিনি বলেন, যেকোনও সময় সরকার যখন নির্বাচন চাইবে, আমরা যাতে ডেলিভার করতে পারি, সেই প্রস্তুতি আমরা নেবো। আমরা কোনও ধরনের কোনও ব্লেম নিতে রাজি না। এই কথাটা ওনাকে (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) জানিয়েছি এবং সেই লক্ষ্যে আমরা কিন্তু প্রস্তুতি নিয়েছি।

বৈঠকে ‘মব’ নিয় চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের প্রশ্ন প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, উনি জানতে চাইলেন যে ইলেকশনের সময় কোনও দলের ওপরে যদি মব সৃষ্টি হয়, তাহলে কী হবে। আমি বললাম, ইলেকশন তো এখনও দেরি আছে। ইলেকশনের সময় যখন ৩০০ আসনে একদিনে ইলেকশন হবে, তখন তা ৩০০ জায়গায় ভাগ হয়ে যাবে। যারা মব সৃষ্টি করে, ওরা দেখবেন যার যার আসনে চলে গেছে। একসঙ্গে এত লোক একত্রে আর পাওয়া যাবে না, ঢাকা শহর খালি হয়ে যাবে। যারা মব সৃষ্টি করতে চাইবে, তারা সুবিধা করতে পারবে না।

নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ইসির নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করে সিইসি বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব যেহেতু আমাদের হাতে, সেহেতু ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য আমরা আমাদের দিক থেকে পুলিশ প্রশাসন, সেনাবাহিনী যাদের যা করার আছে—সব জায়গায় আমরা সাপোর্ট দিই এবং তাদের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকে। তারাও খুব কো-অপারেটিভ থাকেন সব সময়ই। তারা আমাদের দিক থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং নির্বাচনকালীন সময়ে তারা সব সময় আমাদের সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে। অতীতে যেমন করেছে, ভবিষ্যতেও করবে। এই আস্থার জায়গা থেকে আমি ওনাকে বলেছি যে ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে জানি, এই অভিজ্ঞতা থেকে বলেছি। আমরা বিভিন্ন সময়ে এই ধরনের আশঙ্কার কথা শুনেছি, কিন্তু যখন নির্বাচন এসেছে, তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এসেছে। কারণ নির্বাচনের সময় সবাই চায় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক এবং একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হোক।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, একটা কথা তিনি (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) ফাঁক দিয়ে বলেছেন, গুজব ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নিয়ে। আমি বলেছি, এই দেশটা গুজবের দেশ। তিনি আবার গুজবটা দূর করতে চান। আমি গুজব কানে না নিতে বলেছি। আমরা পুরো নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা ফেরত আনার ব্যবস্থা করেছি। ভোটের দায়িত্বে ৯৫ শতাংশ সরকারের লোক, আর ৫ শতাংশ ইসির, তিনি এমন বলেছেন। আমি বলেছি, সরকার ৯৫ শতাংশ যদি রেজাল্ট নিজের দিকে আনে এটা একটা, আরেকটা হলো আমাদের ৯৫ শতাংশ জনগণের পক্ষে। এটা সৎ উদ্দেশ্যে। অতীতে এটার অপব্যবহার হয়েছে। উনি বলেছেন, এটা ঠিক। আমি বলেছি, সরকারকে বাদ দিয়ে ভোট সম্ভব নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাগবে, বাজেট লাগবে, ওনাদের সহযোগিতা ছাড়া ভোট সম্ভব নয়। ৯৫ শতাংশ সরকারের লোকবল রেজাল্ট নিজেদের পক্ষে নিচ্ছেন না। কেননা, সরকার প্রধান কোনও দলের না। তিনি স্বাধীনভাবে ইসি যেন কাজ করতে পারে, সে সহযোগিতা করেছেন, সেটাও জানিয়েছি। আমরা সরকারের কোনও হস্তক্ষেপ ছাড়া সহযোগিতা পেয়েছি।

সিইসি বলেন, মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে বৈঠকে কালোটাকার কথা এসেছে, এটা একেবারে বন্ধ করতে তো পারবো না। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বসেছি, সেটাও জানিয়েছি। আমি আশাবাদী, সর্বশক্তি দিয়ে শেষ পর্যন্ত ফাইট করবো। দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে সুন্দর নির্বাচন যেন হয় সেই চেষ্টা করবো।

নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা সমঝোতা আসবে বলে আশা ব্যক্ত করে সিইসি বলেন, আমার ধারণা হলো রাজনৈতিক দলগুলো দেশের স্বার্থ সবার ওপরে বিবেচনায় রাখবেন। দলগুলো দেশের স্বার্থে কাজ করেন, দেশের কথা চিন্তা করে কাজ করেন এবং শেষ পর্যন্ত গিয়ে দেখবেন যে একটা পজিশনে এসে যায়। আমি ওনাকে বলেছি, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো দেখবেন আপনি শেষ পর্যন্ত একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে আসবে।

এসময় সিইসির সঙ্গে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক প্রধান ডেভিড মো, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ফিরোজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ‎গত বছরের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এটিই মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে সিইসির প্রথম বৈঠক।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন