আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
নেদারল্যান্ডসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। স্থানীয় সময় সোমবার (১০ জুলাই) অনাকাঙিক্ষতভাবে এই ঘোষণা দেন তিনি। দেশটির ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে বেশি সময় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতাসীন ছিলেন। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মাত্র দুদিন আগেই মার্ক রুটের নেতৃত্বে গঠিত জোট সরকারে পতন ঘটে। অভিবাসন নীতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে বিরোধের জেরে সরকার ভেঙে যায়। এরপর পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটও।
তবে সোমবার রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে মার্ক রুট বলেন, ‘সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বেশ কিছু বিষয় আমাকে প্রভাবিত করেছে। গতকাল সকালে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আমি এখন থেকে আর ভিভিডি পার্টির প্রধান হিসেবে আর কাজ করব না। নির্বাচনের পর নতুন সরকার এবং মন্ত্রীসভা গঠনের পর আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’
চারটি দল নিয়ে গঠিত জোট সরকারের মধ্যে অভিবাসন নীতি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই বিতর্ক চলছিল। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে শুক্রবার (৭ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সভাপতিত্বে বৈঠকে বসে দলগুলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি নেতারা।
প্রতিবেদন মতে, মাত্র এক বছর ছয় মাস আগে জোট সরকার গঠন করা হয়েছিল। তবে শুরু থেকেই অভিবাসন নীতিতে দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্বের শুরু হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, চলতি বছরের নভেম্বর মাসেই দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের রক্ষণশীল দল ভিভিডি পার্টি নেদারল্যান্ডসে শরণার্থী বা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের স্রোত কমানোর চেষ্টা করে আসছে। কারণ শরণার্থীদের জন্য নির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি মানুষ রয়েছে। তবে মার্ক রুটের পরিকল্পনার বিরোধিতা করছে শরিক দলগুলো।
শুক্রবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় মন্ত্রীসভার এক জরুরি বৈঠকের পর সরকার ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রধানমন্ত্রী রুট। মন্ত্রীসভার সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে তিনি জানান, শনিবার (৮ জুলাই) রাজা উইলেম আলেকজান্ডারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন তিনি।
সেই সঙ্গে রুট আরও জানান, পদত্যাগ করলেও তার সরকারের মন্ত্রিসভাই পরবর্তী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত অন্তর্বতীকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে।
রুট নেদারল্যান্ডসের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১০ সালে প্রথমবার জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। এরপর আরও তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।