হোম জাতীয় সমালোচনায় কান না দিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করুন…প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সমালোচনায় কান না দিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করুন…প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

কর্তৃক
০ মন্তব্য 118 ভিউজ

সংকল্প ডেস্ক :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমালোচনায় কান না দিয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করতে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘কে কী বললো, কে কী লিখলো ওইদিকে কান দিলে কোনও কাজ করতে পারবেন না। নিজের ওপর বিশ্বাস থাকতে হবে, নিজের ওপর আস্থা থাকতে হবে। আপনি সঠিক কাজটি করছেন কিনা। আস্থাটা থাকলে কাজের ফল দেশবাসী পাবে, দেশের মানুষ পাবে।’

বৃহস্পতিবার  সকালে গণভবন থেকে মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহের ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর এবং এপিএ ও শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে যুক্ত হন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা

কোভিড মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেক কিছু নিয়ে সমালোচনা করে। কিন্তু আমি মনে করি তারা যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে এবং সেই সময় তাৎক্ষণিকভাবে যে কাজগুলো করার দরকার ছিল সেটা যথাযথভাবে করা হয়েছে বলেই কোভিড-১৯ আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি।’

বাংলাদেশ দুর্যোগ প্রবণ এলাকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ আসবে, দুর্যোগের জায়গাই বাংলাদেশ। কিন্তু সেই দুর্যোগ মোকাবিলা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

আওয়ামী লীগের দলীয় সহায়তা

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবে বিভিন্ন সহায়তার কথা তুলে ধরেন সরকার প্রধান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিববর্ষ আমরা পালন করবো এই কর্মসূচি নিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা যেভাবে করতে চেয়েছিলাম সেভাবে পারলাম না। কিন্তু সেই সঙ্গে সীমিত আকারে করলেও আমাদের লক্ষ্যটা হলো, আমরা আমাদের পার্টি থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা এক কোটি বৃক্ষরোপণ করবো। আবার সরকারিভাবেও সিদ্ধান্ত দিয়েছি বৃক্ষরোপণের। পাশাপাশি প্রত্যেকটা গৃহহারা মানুষ ভূমিহীন মানুষদের গৃহ নির্মাণ করে দেবো। এ বিষয়ে অনুরোধ করবো যারা একেবারে ভূমিহীন, গৃহহীন তাদের আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। একটি মানুষও গৃহহীন, ভূমিহীন থাকবে না। সবাইকে আমরা অন্তত একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেবো। এই ব্যবস্থাটা আমাদের করতে হবে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, আল্লাহর রহমতে সেটা আমরা এই বছরের মধ্যেই সম্পন্ন করতে পারবো, এই বিশ্বাস আমার আছে।’

অর্থ মন্ত্রণালয় কিপটামি করে নাই

করোনাকালে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি যাতে কোনোরকম বাধাগ্রস্ত না হয় বা গতিশীল থাকে। আমরা যে প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দেওয়া শুরু করলাম এটা কিন্তু পৃথিবীর কোনও দেশ আমাদের আগে দিতে পারে নাই। আমরাই প্রথম কিন্তু দিলাম। সেজন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে সবাই কাজ করছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সাধারণত কিছু দিতে গেলে হাত টেনে রাখে; কিপটামি করে। কিন্তু এবারে কিপটামি করে নাই। সবাইকে হাত খুলে যেখানে যেটা দরকার আমরা দিয়ে দিয়েছি। সেভাবে দেওয়া হয়েছে বলেই আজ আমাদের অর্থনীতির চাকাটা সচল থেকেছে।’

জনগণের পাশে থাকতে হবে

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে জনগণের পাশে থাকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের পাশে থাকা। আর আমরা জনগণের ভোট নিয়ে এসেছি। আমরা ওয়াদাবদ্ধ মানুষের কাছে। আপনারা যারা চাকরি করেন, আপনাদের দীর্ঘসময়। আমাদের থেকে সময় অনেক বেশি পান আপনারা। আপনারাও কিন্তু জনগণের কাছে ওয়াদাবদ্ধ। আপনাদের জনসেবা করতে হবে। জনসেবাটা করাই হচ্ছে দায়িত্ব।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আমরা পেছনে ফিরবো না। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবো এবং বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসাবেই গড়ে তুলবো। এটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

যারা পুরস্কার পেয়েছেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীতে যেন আরও বেশি পুরস্কার পেতে পারেন সেভাবেই আপনারা সবাই কাজ করবেন।’

সমালোচনা করাই অভ্যাস

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সবসময় মাথায় রাখতে হবে যে, প্রত্যেকেই নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। অনেক ডাক্তার মারা গেছেন, নার্স মারা গেছেন, স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন। তারা কিন্তু সবাই কাজ করেছেন। আমাদের দেশে এক শ্রেণির লোক থাকে, তাদের সমালোচনা করাই অভ্যাস। পান থেকে চুন খসলে পরে অনেক কথা বলবে। কিন্তু নিজেরা কিছু করবে না।’

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি তো বেসরকারি টেলিভিশন অনেক দিয়ে দিয়েছি। তারপর বিদ্যুৎ দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। এরাই একসময় সমালোচনা করেছিল, এখন সেই ডিজিটাল বাংলাদেশেই আমাদের বিরুদ্ধে নানা রকম অপপ্রচার তারা চালাতে থাকবে। সেটা বলুক। আমি মনে করি, আমরা সঠিক পথে আছি কিনা এটা নিজের আত্মবিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে। সবাই যখন কাজ করবেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে কাজ করবেন। কে কী বললো, কে কী লিখলো ওই দিকে কান দিলে কোনও কাজ করতে পারবেন না। আপনার নিজের বিশ্বাস থাকতে হবে।’

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন