অনলাইন ডেস্ক:
‘পবিত্র ধর্মগ্রন্থের সঙ্গে সংবিধান তুলনীয় নয়’- তাই সংবিধানের শুরুতে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ ও এর বাংলা অনুবাদ রাখাটা সমীচীন নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন।
শনিবার (১২ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে হওয়া সংলাপে প্রস্তাবের সারসংক্ষেপে এ মতামত তুলে ধরেন তিনি। দলটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের নেতৃত্বে এ বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন।
সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জাসদ। দলটি বলেছে, মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে, সেই সঙ্গে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানও তাৎপর্যপূর্ণ উল্লেখ করে তা সংবিধানে উল্লেখ করা প্রয়োজন বলে মনে করে দলটি।
মুশতাক হোসেন বলেন, সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের উল্লেখের অবশ্যই ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে, সেই সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের শেষে ১৯৯০–এর গণ-অভ্যুত্থানও তাৎপর্যপূর্ণ। ৯০- এর গণ-অভ্যুত্থানকেও সংবিধানে মর্যাদার সঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন। সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও ৭ মার্চের ভাষণ অপসারণ আমরা সমর্থন করি না। দেশের নাম বাংলাতে পরিবর্তনকে আমরা অনাবশ্যক মনে করি। সংবিধানের ৫ম ও ৭ম সংশোধনী বাতিল থাকবে।
বাঙালির বাইরে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীকে উল্লেখ করার সময় ‘আদিবাসী’ অভিধাটি সংজ্ঞাসহ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার বলে মনে করে বাংলাদেশ জাসদ। একই সঙ্গে দলটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বয়সসীমা কমানোরও বিপক্ষে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদ শুধু অর্থবিলে দলীয় সিদ্ধান্তে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। দলটি অর্থবিলের পাশাপাশি অনাস্থা প্রস্তাবেও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিতে না দেওয়ার পক্ষে।
নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণের প্রস্তাবে বৈষম্য আরও বাড়বে বলে মনে করে বাংলাদেশ জাসদ। একই সঙ্গে তারা মনে করেন, নির্বাচন কমিশনারদের মেয়াদ পরবর্তীতে জাতীয় সংসদ কর্তৃক শাস্তির বিধান নির্বাচন কমিশনারদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।
বাংলাদেশকে প্রদেশে বিভক্ত করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবকে সময়ের দাবি বলে মনে করে বাংলাদেশ জাসদ। দলটি মনে করে, সব ক্যাডারের মাঝে সমতা নিশ্চিত করা, কোনো বিশেষ ক্যাডারকে ঔপনিবেশিক আদলে গড়ে তোলার চেষ্টা পরিহার করা উচিত। জেলা পরিষদ রাখার পক্ষেও মতো দিয়েছে দলটি।