হোম আন্তর্জাতিক শ্রেয়া ঘোষালের নামে প্রতারণা, সম্পৃক্ততা নেই বাংলাদেশ উপদূতাবাসের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

ভারতের প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী শ্রেয়া ঘোষালের নাম করে কলকাতায় একটি প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পড়েছেন সেখানকার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কলকাতায় পরিচিত এক সঙ্গীত শিল্পীও একইভাবে প্রতারণার শিকার বলে জানা যাচ্ছে। তবে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে, শ্রেয়া ঘোষালের নাম করে কলকাতায় বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সঙ্গে প্রতারণা করার বিষয়টি সঠিক নয়।

বিষয়টি অতি-সংবেদনশীল বলেই ক্যামেরার সামনে কোনো পক্ষ মুখ খুলতে চাননি। তবে ক্যামেরার বাইরে যোগাযোগ করার পর সময় টেলিভিশনের কলকাতা অফিস নিশ্চিত হয়েছে শ্রেয়া ঘোষালের নাম করে যে প্রতারণার ঘটনা এর সঙ্গে সরাসরি কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের কোনো সম্পর্ক নেই।

দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ৩১তম বিসিএস ক্যাডারের উপদূতাবাসের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানের জন্য কলকাতার একজন সঙ্গীত শিল্পীর মাধ্যমে শ্রেয়া ঘোষালের সঙ্গে অনুষ্ঠান করার কথিত চুক্তি করা করা হয়েছিল।

ওই কর্মকর্তা নিজে সাড়ে আট লাখ রুপি এবং তার স্থানীয় পরিচিত সঙ্গীত শিল্পী আরও সাড়ে আট লাখ রুপি কথিত শ্রেয়া ঘোষালের এজেন্টকে দেন।

গেলো জানুয়ারি মাসে এ অনুষ্ঠানটি ঢাকায় হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু অনুষ্ঠানের আগেই দূতাবাসের শীর্ষ কর্মকর্তা নিশ্চিত হন যে শ্রেয়া ঘোষালের নামে যে প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সঙ্গে তারা চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন, সেই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রতারক।

এরপরই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার লালবাজারে ব্যক্তিগতভাবে অভিযোগ জানান এবং তার পরিচিত কলকাতার সঙ্গীত শিল্পীও একই রকম আইনের আশ্রয় নেন।

কিন্তু প্রশ্ন ওঠে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে এতোগুলো টাকা কোথা থেকে দিলেন। ঢাকার অনুষ্ঠানের জন্য টাকাগুলো কী বৈধভাবে আনা হয়েছিল কিংবা সেটা কি কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের কোনো সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে ট্রান্সফার করা হয়েছিল, তবে উপদূতাবাস সূত্র নিশ্চিত করেছে, ওই লেনদেন ব্যক্তিগতভাবেই করা হয়েছিল এবং এর সঙ্গেও উপদূতাবাসের কোনো অ্যাকাউন্টের লিংক নেই।

পুরো বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টেও মামলা হয়েছে। যা এ মুহূর্তে বিচারাধীন বলেই জানা যাচ্ছে।

তবে এ বিষয়ে কলকাতার সংশ্লিষ্ট সঙ্গীত শিল্পীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন। তবে ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে রাজি হননি। একইভাবে খবর না করারও অনুরোধ করেন।

তবে উপদূতাবাসের অধিকাংশ কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে ব্যক্তিগতস্তরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। পুরো বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে করা হলেও কেন উপদূতাবাসের নাম জড়ানো হলে ওই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে সেই ক্ষোভও জানিয়েছেন।

সংশ্লিস্ট কর্মকর্তা ঈদের ছুটিতে বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন। কলকাতায় ফিরলেও বিষয়টি নিয়ে দূতাবাসের শীর্ষ পর্যায়ের কূটনীতিকরাও তার কাছে জানতে চাইবেন বলেও সূত্র নিশ্চিত করেছে।

উপদূতাবাসের কয়েকজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দূতাবাসের কর্মকর্তারা কেউ ব্যক্তিগতভাবে কোনো অনুষ্ঠানের সংযোগকারী থাকতেই পারেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি ততটুকুই করতে পারেন, যা উপদূতাবাসকে কোনো রকম বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি না করে। ওই দূতাবাস কর্মকর্তা কীভাবে এতোগুলো টাকা সরকারি চ্যানেলের বাইরে ব্যক্তিগতভাবে দিলেন- সেই প্রশ্নও তুলছেন কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন