নিউজ ডেস্ক:
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি জানিয়েছে, অনেক শ্রমজীবী মানুষের রক্তের বদলে ফ্যাসিবাদের পতন হলেও গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে শ্রমিককে। গত ২ সেপ্টেম্বর এভারগ্রিন কারখানার শ্রমিক মো. হাবিব ইসলামকে যৌথবাহিনী হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিটি ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকার দায়হীনভাবে জনগণের ন্যূনতম মানবাধিকারকে বিপন্ন করেছে। আগের সরকারের মতই এই সরকারও শ্রমিকবিরোধী, নারীবিরোধী, জাতিসত্তাবিরোধী, অগণতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারী ভূমিকা গ্রহণ করছে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি বলেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্লিপ্ততায় দেশে মবোক্রেসি চলছে। রংপুর, লালমনিরহাট, গঙ্গাছড়া, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে মব হামলা, হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও পুলিশ হামলাকারীদের না ধরে উল্টো নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করেছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এক আলোচনায় মব সন্ত্রাসের পর আলোচক মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের গ্রেফতারের বিষয়টিও তারা তুলে ধরে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই গণহত্যার বিচার না করে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে এবং ফ্যাসিস্ট পদ্ধতির কোনও পরিবর্তন আনছে না। বিচারব্যবস্থা ব্যক্তিগত বিদ্বেষে মামলা দিয়ে মানুষকে আটকে রাখছে। চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর জামিন অধিকার সংরক্ষণ করা হলেও সাধারণ নাগরিকরা কারাগারে মৃত্যুবরণ করছে।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি অভিযোগ করে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করেছে যে, যৌথবাহিনী শ্রমিক হত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালাতে সক্ষম হলেও স্থানীয় মব সন্ত্রাস ঠেকাতে অক্ষম।
বিবৃতিতে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, মব আক্রমণ, শ্রমিক হত্যা, আদিবাসী নির্যাতন, ধর্মীয় সংখ্যালঘু হত্যার ঘটনা, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, বিদ্বেষ ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি প্রমাণ করছে অন্তর্বর্তী সরকার জনস্বার্থে কোনও পরিবর্তনে আগ্রহী নয়।
গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি অবিলম্বে মব সন্ত্রাস ও জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি জানায়। একই সঙ্গে শ্রমিক হত্যা, নারীকে গণধর্ষণের আহ্বান, লুটপাট ও সহিংসতায় দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধ, নির্যাতন বন্ধ, অন্যায় ছাঁটাই প্রত্যাহার এবং নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে সংগঠনের পক্ষে স্বাক্ষর করেন আনু মুহাম্মদ, ড. সামিনা লুৎফা নিত্রা, ডা. হারুন উর রশীদ, ড. মাহা মির্জা, মাহতাব উদ্দীন আহমেদ ও মারজিয়া প্রভা।