নিজস্ব প্রতিনিধি:
আওয়ামী লীগ দলীয় সম্পৃক্ততা ও অনিয়ম দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ থাকায় সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ সহিদুর রহমানকে অপসারনের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসুচি পালন করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিরা। উপজেলা সমাজসেবা অফিসের সামনে বুধবার দুপুরে তারা অবস্থান এ কর্মসুচি পালন করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি জিএম মাসুম বিল্লাহ, মুহাইমিনুল ইসলাম তানভীর, বিল্লাল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, এম আব্দুল্লাহ, ওমর ফারুক, জাকারিয়া, সাগর, ইমন ও নুরুল হুদা প্রমুখ।
ছাত্র প্রতিনিধিরা জানান, দুর্নীতিবাঁজ সহিদুর রহমানকে শ্যামনগরের অফিসে বসার সুযোগ দেয়া হবে না। ইতিপুর্বে ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রথম দফায় শ্যামনগরে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ আওয়ামী লীগকে পুনঃর্বাসিত করেছিলেন। এছাড়া সহিদুরের বিরুদ্ধে বরসা এনজিওর নামে স্থানীয় হাজারও মানুষের কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ তুলে অতিসত্ত¡র তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা। সাতক্ষীরার আওয়ামী লীগ দলীয় এমপির ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে বিগত ১০ বছরে সহিদুর রহমান সমাজসেবা অফিসকে নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছিলেন বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শেখ সহিদুর রহমান জানান, ‘আমি মুলত শ্যামনগরে যোগদান করবো না। যেহেতু ঢাকা থেকে অর্ডার হয়েছে, তাই কাগজের প্রক্রিয়ার সম্পন্ন করতে আমি শ্যামনগরে আসতে বাধ্য। তিনি আরও বলেন, আমি আবেদন করবো দুরে কোথাও যাওয়ার। তার বিরুদ্ধে ছাত্র প্রতিনিধিদের অবস্থান কর্মসুচি ও বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অফিসে যায়নি। তাই কি হয়েছে বলতে পারিনা। এরপর তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
জানা যায়, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চরদাহ গ্রামের বাসিন্দা শেখ আহম্মদ আলীর ছেলে শেখ সহিদুর রহমান। এলাকায় তিনি ‘চালাক ময়না’ নামে পরিচিত। ইতিপুর্বে তিনি আ.লীগের পরিচয়ে পরিচিতি পেলেও বর্তমানে এক সচিবের ভাগ্নে পরিচয় দিচ্ছেন। সহিদুর রহমান গত ২০০৫ সালে একটি প্রকল্পের অধীনে দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তরে যোগদান করেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে মামলার সুত্র ধরে রাজস্বখাতে চাকুরী স্থানান্তরের পর স্থায়ীকরণসহ প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। চাকুরী জীবনের শুরু থেকেই অদ্যবধি সহিদুর রহমান নিজ জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও কালিগঞ্জসহ সাতক্ষীরা সদরের সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাতক্ষীরা সরকারী কলেজ রোডে তার আলিশান বাড়ি দর্শণার্থীদের রীতিমত চমকে দেয়। সাতক্ষীরার বরসা এনজিওসহ সিভি হসপিটাল ও চায়না বাংলা শপিং কমপ্লেক্সে তার শেয়ার রয়েছে বলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। এছাড়া সমাজসেবা কর্মকর্তা সহিদুর রহমান এর বিরুদ্ধে, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধিভাতা, অসুস্থ রোগিদের সরকারী অনুদান প্রাপ্তদের ক্ষেত্রে দলীয়করণ এবং বিভিন্ন এতিমখানায় সরকারী সাহায্য প্রদানের ক্ষেত্রে মোটা টাকা হাতিয়ে নেয়ার ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনি খাতুন জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য তিনি ৭ দিনের সময় চেয়েছেন।