শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি :
আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি শৈলকুপা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপ-নির্বাচন। আওয়ামীলীগ বিএনপি ও স্বতন্ত্র থেকে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন। গত বছর ৪ নভেম্বর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আমৃত্যু উপজেলা চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন এর মৃত্যুতে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হয়। শুরু হয় নতুন গুঞ্জন, কে পাচ্ছেন দলীয় টিকিট? ১০ হেভিওয়েট প্রার্থীর লবিং গ্রপিং আর প্রতিযোগিতার সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কাঙ্খিত নৌকা প্রতীক লাভ করেন প্রয়াত বীরমুক্তিযোদ্ধা সোনা শিকদার পত্নী শেফালী বেগম।
পৌরসভাসহ উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের ২ লাখ ৮৮ হাজার ২৩৪ জন ভোটার নিয়ে শুরু হয়েছে উপ-নির্বাচন। আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের বিপরীতে ধানের শীষ নিয়ে বিএনপি দলীয় প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এ্যাড. হুমায়ন বাবর ফিরোজ ছাড়াও আনিচুর রহমান নামে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
২৮ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুরু থেকেই দলীয় গ্রæপদ্ব›দ্ব বিভেদ ভূলে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের সকল নেতৃবৃন্দ কোমরবেঁধে একযোগে নির্বাচনী মাঠে নামে। নিয়মিত নৌকার সমর্থনে মাইকিং, পোস্টারিং, নির্বাচনী সভা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলার কোথায় চোখে পড়েনি ধানের শীষ ও আনারস প্রতীকের কোন মাইকিং পোস্টারিং, নির্বাচনী সভা প্রচারণা। চোখে পড়ার মত সরব উপস্থিতি আর আগাম জয়ের উল্লাস নিয়ে মাঠ কাঁপাচ্ছে শেফালী বেগমের কর্মী সমর্থকেরা। বিজয় যেন শুধু সময়ের ব্যবধান এমন ধারনাই সবার মুখে মুখে। আওয়ামী লীগের ঐক্যবদ্ধ প্রচারণায় বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয় সুনিশ্চিত করতে অপেক্ষা করতে হবে ২৮ ফ্রেব্রæয়ারি পর্যন্ত। নেতাকর্মী চাঙ্গা রাখতে উপজেলা শহর, বিভিন্ন ইউনিয়নের হাটবাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চলছে শত শত মোটর শোভাযাত্রা, মিছিল-মিটিংসহ নানা রকম প্রচারনা।
অপরদিকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি দলীয় প্রার্থী হুমায়ন বাবর ফিরোজ এবং আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিচুর রহমান শুধু শহর বাজার নয় কোথাও তাদের পোস্টারিং, গণসংযোগ, প্রচারনায় মাঠে নেই। তাদের দু-একটি প্রচার মাইক ভাংচুরের ঘটনার পর থেকে আজ অবধি সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ ছাড়া তেমন চমক দেখাতে পারেনি।
বিএনপি দলীয় প্রার্থী হুমায়ন বাবর ফিরোজ প্রার্থী জানান, তার মনোনয়ন পত্রের প্রস্তাবক ও সমর্থক কে বাড়ি ছাড়া, পোষ্টার টাংগানোর অপরাধে মারধর স্থানীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনী আচরন বিধি ভঙ্গ করে প্রকাশ্য প্রচারাভিযান চলছেই। দাবি করেন, ধানের শীষের ব্যাপক জনপ্রিয়তায় সরকার সমর্থকেরা ভীত হয়ে প্রতিপক্ষ দমাতে নানা কৌশল চালিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনার যদি ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে পারে তাহলে তিনিই বিজয় অর্জন করবেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটের মাঠ তৈরি নিয়ে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাগণ এখন পর্যন্ত তার কোন অভিযোগ আমলে নেয়নি এবং প্রশাসনিক সহযোগীতা পাওয়া যায়নি।
এছাড়াও আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিচুর রহমান জানান, উপজেলাব্যাপী তার প্রচুর কর্মী-সমর্থক রয়েছে। তার সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নানা মাধ্যমে হুমকি ধামকি উপেক্ষা করে নির্বাচনে নৌকার বিপরীতে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীই বিজয় অর্জন করবে বলে দাবি করেন। তিনিও পোষ্টার ছেড়া মাইক ভাঙ্গার অভিযোগ করে প্রশাসনের নিকট কোন প্রতিফল পাননি বলে মন্তব্য করেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির মুখপাত্র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক মতিয়ার রহমান জানান, সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা শৈলকুপায় এখন বিএনপি নেই বললেই চলে। কর্মী সমর্থক না থাকায় বিএনপির প্রার্থী ঘরে বসে মোবাইলে ভোট চাচ্ছে। আওয়ামী লীগের কোন কর্মী সমর্থক তার নির্বাচনী প্রচারে বাধা প্রদান করেনি ও হুমকি দেয়নি বলেও তিনি দাবি করেন। নির্বাচনকে প্রানবন্ত এবং অর্থবহ করতেই বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারণায় সমান সুযোগ পেয়েছে। তারা দলীয়ভাবে দেউলিয়া হয়ে মিডিয়ায় অহেতুক আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করছেন বলে মন্তব্য করেন।
শৈলকুপা উপজেলা সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ জানান, আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারী রবিবার উপনির্বাচনে ১২০টি কেন্দ্রে ব্যালটে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ৪জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার ভিডিপি সদস্যরা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া ৬ প্লাটুন র্যাব, ৩ প্লাটুন বিজিবির পাশাপাশি টহলে নিয়োজিত থাকবে মোবাইল টিম। তিনি আরো জানান, ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন প্রার্থী নির্বাচন সংক্রান্ত লিখিত অভিযোগ জানায়নি। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ করতে তারা যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বলেও জানান তিনি।
s