নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা (বাসস) ঃ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, শেখ হাসিনা আদালত মানেন না, পার্লামেন্ট মানেন না। উনি আদালতের উপর বন্দুক রেখে পঞ্চাদশ সংশোধনী বাতিল করে, সেখান থেকে তিনি কেয়ার টেকার সরকারের বিধান বাতিল করে দিলেন। ৫ আগস্ট এই গণঅভ্যুখ্যান পর আদালতে আমরা রিট করে তত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা চেষ্টা করেছি। আমরা শুনানি করেছি, আমরা সুবিচার পেয়েছি। আদালতে কেয়ার টেকারের বিধান অক্ষুন্ন রেখে পঞ্চাদশ সংশোধনী বাতিল করে সেখানে কেয়ার টেকার সরকার সংযুক্ত করা হয়েছে। কত বড় ফ্যাসিস্ট তিনি পার্লামেন্টের কথা শুনবেন না, আদালতের কথা শুনবেন না। উনার কথায় উনি চলবেন। এই কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিবাদীর বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছি। মানবিধার নেই, ভোটাধিকার নেই। আলেম ওলামা ইসলামী মূল্যবোধে উজ্জীবিত জনশক্তিকে গ্রেপ্তার করে কিভাবে কারাগারে নির্যাতন করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, কামারুজ্জামান, মীর কাসেম আলী এবং আব্দুল কাদের মোল্যাকে বৃদ্ধ বয়সে নিরাপরাধ, নেক মানুষ এবং জীবনে তারা একটি মিথ্যা কথা বলেননি, এক টাকা হারাম খাননি, কাউকে কষ্ট দেননি। অথচ সাজানো মামলা, সাজানো বাদী, সাজানো স্বাক্ষী, সাজানা ট্রাইবুনাল ও সাজানো বিচারক দিয়ে কারাগারে ফঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। অধ্যাপক গোলাম আজম, এই সাতক্ষীরার প্রিয় মানুষ আব্দুল খালেক মন্ডল, আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদি, মাওলানা আবুল কালাম ইউসুফ, মাওলানা আব্দুস সোবহান, নাজির আহমেদ ও মকবুল আহমেদের মত ৮০-৯০ বছরের বৃদ্ধদেরকে গ্রেপ্তার করে করে কারাগারে ঢুকিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। এই গুম, খুন, হত্যা ও ক্রস ফায়ারের মাস্টার মাইন্ড হচ্ছে শেখ হাসিনা। উনি ট্রাইবুনাল বানিয়েছিলেন, ইসলামি আন্দোলনকে উনি শেষ করে দিবেন। অথচ ৫ আগস্টের ৪ দিন আগে উনার মাথাটা গরম হয়ে গেল। কোটি কোটি মানুষের উত্তাল আন্দোলন ঠেকানোর জন্য ইবলিস উনাকে বুদ্ধি দিল সব সমস্যা জামায়াত-শিবির, ওইটাকে ঠেকাও। উনি মনে করলেন জামায়াত শিবিরকে নিষিদ্ধ করলেও মনে হয় ক্ষমতায় থাকা যাবে। ভাইরে, মরনের সময় হুস থাকেনা, দেখবেন সাগরের ঢেউয়ের মধ্যে যদি কেউ ডুবে মরতে যাই, তাহলে চারিদিকে শুধু হাতড়াই, ডুবে যাচ্ছে, বাঁচবে কি করে ? সাগর মধ্যে কচুরিপানা দেখলে সেটি ধরেও বাঁচতে চাই। শেওলা ধরে কি বাঁচা যাই ? উনি ৫ আগস্টের ৪ দিন আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে বললেন, বাংলাদেশে যত আন্দোলন হচ্ছে সব জামায়াত-শিবির করছে। উনি আইন করে জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করলেন। মহান আল্লাহতালার ইচ্ছা না হলে, মানুষের ইচ্ছা পূরন হয়না। আল্লাহতায়ালা তাকে বেশী সময় দিলেন না। দাম্ভিক, অহংকারী, প্রতিহিংসা পরায়ন শাসকদের আল্লাহ কিছুটা হয়তো ছাড় দেন কিন্তু একদম ছেড়ে দেন না।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলছে। ফ্যাসিবাদের লোকেরা জামায়াতে ইসলামীকে যেভাবে নির্মূল করতে চেয়েছিল, তাদের মুখে এখনও ফ্যাসিবাদের সেই গন্ধ পাওয়া যায়। এই পথ সর্বানাশার পথ। ফ্যাসিবাদের যুগের অবসান হয়েছে। একটি জাতীয় ঐক্যের ভিক্তিতে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে আসুন অনৈক্য বিভেদ, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী কোনো ভূমিকা না নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ও আগস্টের মূল চেতানাকে ধারণ করে আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণে এগিয়ে যাই। তিনি আরো বলেন, জামায়াত ইসলামী চাই দেশে একটি কল্যাণময় রাস্ট্র, একটি ওয়ের ফেয়ার স্ট্রেট, ইসলামের সৌন্দর্য, জনগণের মাঝে শাসন ব্যবস্থা এমনভাবে করবে যে বাংলাদেশ হবে শোষন মুক্ত, বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক মুক্তি এক নিরাপদ সমৃদ্ধির বাংলাদেশ।
তিনি সোমবার বিকালে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা ফুটবল মাঠে উপজেলা জামায়াতের বার্ষিক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথিন বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তালা উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মফিদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী অধ্যাপক ইদ্রিস আলীর সঞ্চালনায় কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর উপাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম মুকুল, নায়েবে আমীর ডা. শেখ মাহমুদুলহক, জেলা সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমার, সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক গাজী সুজায়েত আলী, ওমর ফারুকসহ অন্যান্যরা।