রাজনীতি ডেস্ক:
নানা নাটকীয়তার পর ঝালকাঠি-১ আসনের নৌকাবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল মার্কার এম মনিরুজ্জামান মনির সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে নৌকার প্রার্থী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের জয়ের পথ অনেকটা সহজ হয়ে গেল।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ঝালকাঠি-১ আসনের নির্বাচনী এলাকা রাজাপুরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে সংবাদ সম্মেলন করে মনিরুজ্জামান মনির নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তিনি ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।
দলীয় চাপ কিংবা অভিমানের বিষয় রয়েছে কি না জানতে চাইলে ছেলের অসুস্থতার কারণ উল্লেখ করে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যান মনির। এ সময় কেঁদে ফেলেন আওয়ামী লীগের এ নেতা।
এদিকে গত ১৮ ডিসেম্বর এ আসনটিতে নৌকার নতুন প্রার্থী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরকে বর্জন করে মনিরকে সমর্থন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু গত ২০ ডিসেম্বর বরিশালের বাসায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমুর মধ্যস্ততায় রাজাপুরের শাহজাহান ওমরকে বরণ করে নেয় স্থানীয় আওয়ামী লীগ। ফলে দৃশ্যপট বদলে যেতে থাকে।
এ অবস্থায় দলীয় চাপ কিংবা অভিমানে নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছেন কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মনির বলেন, ‘সে প্রশ্নের উত্তর অন্য কোনোদিন দেব। তবে ছেলের অসুস্থতার কারণে আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যাচ্ছি।’
এ সময় কান্নায় আবেগাপ্লুত হয়ে মনির আরও বলেন, আদর্শিক রাজনীতি দিন দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে, এটার একটা সংকট রয়েছে। রাজনীতি থেকে আদর্শিক নেতাকর্মী আমরা দিন দিন হারিয়ে ফেলছি।
আজকে যদি দলে আদর্শিক নেতাকর্মীর মূল্যায়ন না থাকে তবে রাজনীতি ও দেশ দুর্বল হবে বলেও উল্লেখ করেন ঝালকাঠি-১ আসনে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়া এ স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে আগামী দিনগুলোতেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নেতাকর্মীদের নিয়ে কাটিয়ে দেবেন বলে জানান মনিরুজ্জামান মনির।
সংবাদ সম্মেলনে ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খান সাইফুল্লাহ পনির, রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আলম সরফরাজসহ ঝালকাঠি জেলা ও রাজাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠি-১ আসনটিতে প্রথমে নৌকার দলীয় মনোনয়ন পান টানা তিনবারের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুন। এরপর হঠাৎ করে বিএনপির সাবেক শীর্ষ নেতা শাহজাহান ওমরকে নৌকায় চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়। আসনটিতে নিজের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর শাহজাহান ওমরকে সমর্থন দেন এমপি হারুন।
সবশেষ মঙ্গলবার স্বতন্ত্র প্রার্থী মনির নির্বাচন থেকে সরে গেলে আসনটিতে এখন শাহজাহান ওমরের আর কোনো শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।
অপরদিকে মনিরুজ্জামান মনির ২০১৪ সাল থেকেই আসনটিতে নৌকার মনোনয়ন চেয়ে আসছেন। তিনি আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য। নির্বাচনী এলাকা রাজাপুর-কাঠালিয়াতে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে তিনি নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে দলীয় কার্যক্রম চাঙা রেখেছেন।