বেনাপোল প্রতিনিধিঃ
শার্শায় মাদ্রাসার নিয়োগে সভাপতিকে পিস্তল ঠেকিয়ে পরীক্ষার চুড়ান্ত শিটে স্বাক্ষর করার অভিযোগ করেছে। এবং ওই মাদ্রাসার ৫ টি পদে নিয়োগ বানিজ্যে হয়েছে ২৮ লক্ষ টাকা বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি শার্শার মহিষা পীর আব্দুস ছোবহান আলীম মাদ্রাসার । গত ১০ অক্টোবর যশোর শংকরপুর একটি কেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষা শেষে ওই মাদ্রাসার সভাপতিকে একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে সুপারিনটেনডেন্ট ফ.ব,ব,ম সাইফুর রহমান আজমী সন্ত্রসীদের দিয়ে বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে পরীক্ষার চুড়ান্ত শীটে স্বাক্ষর করান বলে সভাপতি আব্দুস সালাম অভিযোগ করেন। এবং তিনি এ ব্যাপারে থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করার আবেদন দিয়েছেন।
উপজেলার মহিষা পীর আব্দুস ছোবহান আলীম মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুস সালাম অভিযোগ করে বলেন মাদ্রাসার ৫টি শুন্য পদে নিয়োগ পরীক্ষা হয় গত ১০ অক্টোবর যশোর শংকরপুর একটি কেন্দ্রে। ওই পরীক্ষাটি হওয়ার কথা ছিল যশোর ছাতিয়ানতলা একটি কেন্দ্রে। হঠাৎ একদিন আগে মাদ্রাসার সুপার সাইফুর রহমান বলেন পরীক্ষা কেন্দ্র ডিজি মহাদয়ের প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম বদল করে শংকরপুর নিয়েছে। পরীক্ষা শেষে ফলাফলের চুড়ান্ত তালিকা তৈরী করে আমার স্বাক্ষর চায়। আমি বুঝতে পারি কারসাজি করে এ নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তখন আমি ওই শীটে স্বাক্ষর করতে আপত্তি জানালে আমাকে একটি কক্ষে চা খাওয়ার কথা বলে সুপার ৮/১০ জন সন্ত্রাসীকে এনে আমার বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে গালাগালি করে জোর করে স্বাক্ষর করে নেয়। এ ব্যাপারে আমি থানায় একটি জিডি করেছি। জিডির কপি দেখতে চাইলে তিনি বলেন এ এস আই রবিউল ইসলামের কাছে কপি রয়েছে। ২৮ লক্ষ টাকা নিয়োগ বানিজ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার কাছে কেউ টাকা দেয়নি। আমি বিষয়টি জানিনা।
মাদ্রাসার সুপার বলেন সহকারী সুপার ,সহকারী হিসাব রক্ষক, কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কমীর্ ও একজন আয়া পদে মোট ৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে উক্ত পদ গুলির বিপরীতে আবেদন জমা হয় ৪৮ টি । আর পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে ২৭ জন। এরপর পরীক্ষা যাচাই বাছাই করে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করায় সহকারী সুপার পদে আছাদুজ্জামানকে হিসাব সহকারী পদে হযরত আলী, কম্পিউটার অপারেটর পদে রফিকুল ইসলাম,নিরাপত্তা প্রহরী পদে মোজাফফার হোসেন ও আয়া পদে হালিমা খাতুনকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। পিস্তল দিয়ে জোর করে স্বাক্ষর নেয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন এটা মিথ্যা কথা । সভাপতির স্ত্রী কম্পিউটার অপারেটর পদে প্রার্থী ছিল। পরীক্ষায় ভালো ফলাফল না করায় নিয়োগ দানে ব্যর্থ হয়ে আমার নামে এসব অপবাদ ছড়াচ্ছে। সেই আমার জামার কলার্ট ধরে কিল ঘুষি মেরে আমাকে অপমান অপদস্ত করেছে। ২৮ লাখ টাকা যে নিয়োগ বানিজ্য হয়েছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জান্ ানেই। কে টাকা নিয়েছে। সভাপতি নিয়েছে কিনা আমি জানি না। আমার সাথে কোন অর্থ লেনদেন হয়নি। কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত আছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি একজন জমায়াত এর এক নিষ্ট কর্মী।
মাদ্রাসার মধ্যে একজন ব্যাক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সুপার সাহেব রাঘব বোয়াল। সে জামাত এর একজন কর্মী। এলাকার অনেক মাতুব্বরকে সে ম্যানেজ করে এ নিয়োগ বানিজ্য করে। তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। কায়বা ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান হাসান ফিরোজ টিংকু বলেন, নিয়োগে সভাপতি থাকে নির্বাহী পদে। সেখানে টাকার লেনদেন হয়েছে কিনা আমি বলতে পারব না। এটা ওই সভাপতি বলতে পারবে।
শার্শা থানার এ এসআই রবিউল ইসলাম এর কাছে জিডির বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আব্দুস সালাম একটি আবেদন দিয়েছে। তবে তা তদন্ত না করে জিডি হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তদন্ত করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এখনো করা হয়নি।