হোম অন্যান্যসারাদেশ শরীয়তপুরের ‘ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসক ব্রিগেড বলেন’ করোনা মোকাবিলায় মডেল হতে পারে

শরীয়তপুরের ‘ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসক ব্রিগেড বলেন’ করোনা মোকাবিলায় মডেল হতে পারে

কর্তৃক
০ মন্তব্য 110 ভিউজ
অনলাইন ডেস্ক:
শরীয়তপুরের নড়িয়ার মাঝিকান্দি গ্রামের বাসিন্দা বেলায়েত হোসেন বাড়িতে বসে দুই দিন পেটের ব্যথায় ভুগছিলেন। পরিচিত একজনের মাধ্যমে জানতে পারেন ‘ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসক ব্রিগেডের’ কথা। তাদের মুঠোফোনে কল করে নিজের সমস্যার কথা বলেন। মাত্র ৪০ মিনিটের মধ্যে বাড়ির পাশের রাস্তায় এসে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী হাজির। বেলায়েত হোসেনকে চিকিৎসক ব্রিগেডের চিকিৎসকেরা ব্যবস্থাপত্র ও ওষুধ দেন। এর পর থেকে তিনি ভালো আছেন।

বেলায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে শরীয়তপুরের নড়িয়াতে কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। পেটের ব্যথায় খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম। ফোন করতেই বাড়িতে এই দুর্যোগের মধ্যে চিকিৎসক চলে আসবেন, সেটা ভাবতেই পারিনি। চিকিৎসক ও যাঁরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে তিনি ধন্যবাদ জানান।

করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা সীমিত করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার উদ্যোগ নেন। গত সোমবার নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণ থেকে এ সেবাকাজের উদ্বোধন করেন উপমন্ত্রী। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত নড়িয়ার পসা, বিঝারি, রাজনগর, চামটা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সাড়ে ৬০০ রোগীকে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ দোয়া হয়েছে।

শরীয়তপুর-১ আসনের সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু সদর ও জাজিরা উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। গতকাল বুধবার সদর উপজেলায় এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ ছাড়া বুধ ও বৃহস্পতিবার শরীয়তপুর সদর ও জাজিরা উপজেলার অন্তত ৩০০ রোগীকে চিকিৎসা ও বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়েছে।

ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসক ব্রিগেড
একটি গাড়িতে দুজন চিকিৎসক, দুজন নার্স ও দুজন স্বাস্থ্যকর্মী নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসক ব্রিগেড। এই ব্রিগেডে রাখা হয়েছে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও নগদ টাকা। রোগী দেখার পর ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ দলের কাছে রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ না থাকলে দেওয়া হচ্ছে ওষুধ কেনার জন্য নগদ টাকা।

ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসক দলের একজন চিকিৎসক হলেন শওকত আলী। তিনি স্থানীয় মনোয়ারা সিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষক। শওকত আলী  বলেন, মানুষ বাসা থেকে বের হতে পারছেন না। এমন সময় এ রকম একটা সেবাই মানুষের বেশি প্রয়োজন। এটি সারা বাংলাদেশে করা গেলে মানুষের ভোগান্তি থাকবে না। তবে দরকার উদ্যোগ নেওয়া।
তিনি জানান, গত কয়েক দিন যেসব রোগী দেখেছি তারা পেটে ব্যথা, জ্বর, সর্দি, কাশি ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন উপসর্গে ভুগছিলেন।

উদ্যোগটি সম্পর্কে এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেন, চিকিৎসক দলের মুঠোফোন নম্বর দিয়ে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। এ এলাকার বহু মানুষ ইতালিসহ বিভিন্ন দেশে থাকেন। এটি মাথায় রেখে আমরা মানুষের বাড়ি বাড়ি সেবা দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। যত দিন করোনার প্রাদুর্ভাব থাকবে, তত দিন এ সেবা চলবে বলে তিনি জানান।

শামীম বলেন, চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পাশাপাশি আমরা খাদ্যসহায়তা অব্যাহত রেখেছি। এখন পর্যন্ত নড়িয়ার ২৪টি ইউনিয়নে ২০ হাজার পরিবারকে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন