খেলাধূলা ডেস্ক :
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা রুনির মতে, ঘুরে দাঁড়াতে হলে ইউনাইটেডকে মাঠে নামাতে হবে তরতাজা তরুণ খেলোয়াড়দের। বুড়িয়ে যাওয়া তারকাদের নিয়ে ইউনাইটেড আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না বলেই মনে করেন তিনি।
সোমবার (২২ আগস্ট) ওল্ড ট্রাফোর্ডে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিভারপুলের মুখোমুখি হবে ইউনাইটেড। গতবার মৌসুমের প্রথম দেখায় মোহামেদ সালাহ’র গোলে নাস্তানাবুদ হয়েছিল ইউনাইটেড। এবার তেমন ফলের হাত থেকে বাঁচতে কী করতে হবে তা জানিয়েছেন বর্তমানে ডিসি ইউনাইটেডের কোচের দায়িত্বে থাকা রুনি। মাঠের খেলায় প্রাণসঞ্চার করতে হলে, ভালো করতে কী করতে হবে এ বিষয়ে কলাম লিখেছেন তিনি।
টেন হ্যাগকে এই ম্যাচে রোনালদো ও রাশফোর্ডকে মাঠে নামাতে নিষেধ করেছেন এই ইংলিশ তারকা। দ্য টাইমসে লেখা সেই কলামে রুনি লিখেছেন, ‘আমি (ইউনাইটেডের কোচ হলে) ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর মার্কাস রাশফোর্ডকে খেলাতাম না।’
এই দুই তারকাকে কেন নামানো ঠিক হবে না সে ব্যাখ্যাও অবশ্য দিয়েছেন তিনি। রুনি লিখেছেন, ‘আমি যদি টেন হাগের অবস্থানে থাকতাম, আমার আসল চিন্তা থাকত মাঠে তরতাজা খেলোয়াড়দের নামানো নিয়ে। ইউনাইটেড দলে একজন নাম্বার নাইন নিতে না পারার কারণে ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে রোনালদোর ওপর ভরসা রেখেছিল। এমনকি সে লিগ শুরুর আগপর্যাপ্ত অনুশীলন না করার পরও।’
ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে একাদশে খেলা রোনালদো দেখে রুনির মনে হয়েছে তার যথেষ্ট ম্যাচ ফিটনেস নেই। তাকে দেখে মনে হয়েছে, ম্যাচ খেলার জন্য ফিট হয়ে উঠতে তার আরও সময় লাগবে। টেন হাগকে দলে সতেজ শক্তি আনতে হবে। এ কারণেই রোনালদোকে বাদ দিতে হবে। -রুনি লিখেছেন।
এদিকে ৩৭ বছর বয়সী রোনালদোর পাশাপাশি ২৪ বছর বয়সী রাশফোর্ডের বেলাতেও নেতিবাচক মনোভাব রুনির। ব্রাইটন ও ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে ম্যাচে রাশফোর্ড মাঠে থাকলেও তার খেলা দেখে রুনির মনে হয়েছে, তিনি মাঠের বাহিরে কোথাও তার মনোযোগ রেখে এসেছেন। সেভাবে দৌড়াতেই পারেননি ম্যাচে। তার মতে, ‘মার্কাসের বেলায় আমি বলব, ওর নিজেকে খুঁজে পাওয়ার জন্য অনেক কিছু করতে হবে। এ ছাড়া ওকে আগে ভাবতে হবে যে ও কী চায়। এটা ওর নিজের ভালোর জন্যই করতে হবে। ওকে দেখে আমার মনে হয়েছে, ফুটবল মাঠে ছাড়া ও অন্য যেকোনো জায়গায় থাকতে পারলেই বাঁচে!’
এদিকে ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি তার মনে আঘাত দিয়েছে উল্লেখ করে রুনি প্রশ্ন তুলেছেন ইউনাইটেডের খেলোয়াড়দের মান নিয়েও। তার মতে, ‘আমার সময় থেকে ফুটবল ট্যাকটিক্যালি ও টেকনিক্যালি অনেক উন্নতি করেছে। কিন্তু মূল বিষয়গুলো আর বদলে যায়নি। আপনি যদি না দৌড়ান, চেষ্টা না করেন, তাহলে যেকোনো দলের কাছেই হারবেন। আমি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে এ মৌলিক জিনিসগুলোর অভাব কখনো দেখিনি।’
তবে এর বাহিরেও কয়েকজনের চেষ্টা রুনির চোখে বেশ ভালোভাবে ধরা পড়েছে। ম্যাগুয়ের, ফ্রেডদের মতো তারকারা দলকে জাগিয়ে তুলতে চেষ্টা করছেন বলে মনে করেন তিনি। তিনি লিখেছেন, ‘আমি সব খেলোয়াড় নিয়ে একই কথা বলব না। হ্যারি ম্যাগুয়ের চেষ্টা করবে, চেষ্টা করবে ফ্রেড আর স্কট ম্যাকটমিনেও। এ তিনজন দলটিকে জাগিয়ে তুলতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দুর্দশা যেন কাটছেই না। নতুন মৌসুমের প্রথম দুই ম্যাচেই হেরেছে অপেক্ষাকৃত ছোট দলের বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচে ব্রাইটনের বিপক্ষে ২-১ গোলের হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে উড়ে গেছে ৪-০ ব্যবধানে। তৃতীয় ম্যাচে আরও বড় চ্যালেঞ্জ সামনে। এবার সামনে লিভারপুল বাধা। কোচ এরিক টেন হ্যাগ ঘুরে দাঁড়াতে চান এই ম্যাচ দিয়ে। আর ঘুরে দাঁড়াতে কী করা দরকার সে পরামর্শ তাকে দিচ্ছেন ম্যানচেস্টার কিংবদন্তি ওয়েইন রুনি।