জাতীয় ডেস্ক :
ঝালকাঠিতে অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজদের মরদেহ ভেসে উঠতে শুরু করেছে। সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ঝালকাঠির বিশখালি নদীর নাপিতে খাল এলাকায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ ভেসে উঠলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন লিডার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, মরদেহটি কালো গেঞ্জি ও লুঙ্গি পরিহিত পুরুষ ব্যক্তির। তার শরীরে পোড়া দাগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাকে ওই লঞ্চের যাত্রী বলে ধারণা করা হচ্ছে। মরদেহটি ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সোমবার চতুর্থ দিনের মতো ফায়ার সার্ভিস ও কোস্ট গার্ডের অভিযান অব্যাহত আছে। মরদেহ উদ্ধারের খবরে নিখোঁজের স্বজনরা ছুটে আসেন। তবে উদ্ধার হওয়া মরদেহটি এখনো শনাক্ত হয়নি।
অন্যদিকে, সোমবার দুপুর ২টায় ঝালকাঠি পৌর মিনিপার্কে ডিএনএ টেস্টের জন্য নিখোঁজদের স্বজনদের নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছে সিআইডি পুলিশ। তাদের পক্ষ থেকে শহরে সকালে মাইকিংও করা হয়।
ঘটনার পর থেকে এখনো অসংখ্য যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে। লঞ্চটিতে অগ্নিকাণ্ডের পর প্রাণ বাঁচাতে অসংখ্য যাত্রী নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঝালকাঠি রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি নিখোঁজদের মধ্যে ৫১ জনের তালিকা তৈরি করেছে। জেলা পুলিশের কাছেও ৪১ জনের নাম দিয়েছে নিখোঁজদের স্বজনরা। নিখোঁজদের সন্ধান পেতে গত ৪ দিন ধরে অনেক স্বজন ঝালকাঠি শহরে অবস্থান করছেন।
ফাতেমা শাহিদুন (৪৫) নামে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বাদুরতলা গ্রামের এমন এক নিখোঁজদের স্বজনের সঙ্গে কথা হয়। সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে ফেরে বাবা মুজফফর হাওলাদার ও মা আমেনা বেগমকে তার তিন ছেলে-মেয়ে ওবায়েদুল (৩০), কুলসুম (২২) ও আয়শা (১৯) ঢাকা থেকে বরগুনার গ্রামের বাড়িতে আনতে যান। ওই লঞ্চে করেই পাঁচজন রওনা হন। বাবা-মা ও তিন সন্তান ঘটনার পর থেকে এখনও নিখোঁজ রয়েছে। মরদেহ উদ্ধারের খবরে ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে এসে তিনি হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে যাওয়া এমডি অভিযান-১০ নামের লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিল তার সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, লঞ্চটিতে প্রায় ৩১০ যাত্রী ছিল। তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকে বলছেন, নৌযানটিতে যাত্রী ছিল পাঁচ শতাধিক।