হোম অর্থ ও বাণিজ্য রিটার্ন জমা সহজ করতে সংসদে আয়কর বিল

বাণিজ্য ডেস্ক:

রিটার্ন জমা সহজ করতে আয়কর কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা কমিয়ে সংসদে বিল উত্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে করবর্ষের শেষ তারিখে ৪০ লাখ টাকার বেশি সম্পদ থাকলে, বছরের যেকোনো সময়ে চিকিৎসা বা ধর্মীয় উদ্দেশ্য ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে বিদেশ ভ্রমণ করলে সম্পদ ও দায়ের বিবরণী (রিটার্ন) জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ-সংক্রান্ত ‘আয়কর বিল-২০২৩’ সংসদে উত্থাপন করেন। পরে পাঁচ দিনের মধ্যে সংসদে রিপোর্ট পাঠানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে বিলটি পাঠানো হয়।

বিলটি উত্থাপনের বিরোধিতা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। তবে তার বিরোধিতা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।

ফখরুল ইমাম বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন পাসের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এতে বিদেশে অর্থ পাচার বৃদ্ধির পাশাপাশি খেলাপি ঋণের পরিমাণও বেড়েছে। নতুন আয়কর কার্যকর হলে একই ঘটনা ঘটবে বলে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন।

এরপর অর্থমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, আয়কর ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে এই বিলটি আনা হয়েছে। বিলটি নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। এরপরও সংসদীয় কমিটি ও সংসদে আলোচনার সুযোগ আছে।

করযোগ্য আয় না থাকলেও দেশের সীমানা পেরোলেই ফ্ল্যাট, জমি, আসবাব, ব্যাংক ব্যালান্সসহ যাবতীয় সম্পদের তথ্য জানানো বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে সংসদে উত্থাপিত বিলে। সেখানে বলা হয়েছে, দেশের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ট্যাক্স রিটার্নসহ তাদের সম্পদ ও দায়ের বিবরণী দাখিল করতে হবে। করদাতাদের ট্যাক্স রিটার্নে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে তাদের সম্পদ ও দায় উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো করদাতা যদি তার রিটার্নে বিদেশে থাকা সম্পদ প্রদর্শন না করেন, আর সেই সম্পদের খোঁজ যদি কর কর্মকর্তারা পান এবং ওই সম্পদ অর্জনের উৎস ও অন্যান্য বিষয়ে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে না পারেন তবে কর কর্মকর্তারা জরিমানা করতে পারবেন।

বিলে আরও বলা হয়েছে, দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের বাংলাদেশে তাদের সম্পদ ও দায় ট্যাক্স রিটার্নে দেখাতে হবে। স্বামী বা স্ত্রী এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের যদি টিন নম্বর না থাকে, সে ক্ষেত্রে পরিবারের করদাতাকে তাদের সম্পদ ও আয়ের বিবরণী দাখিল করতে হবে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নতুন আয়কর আইন ১৯২২ সালের আয়কর আইন সংশোধন করে প্রণয়ন করা বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪- এর স্থলাভিষিক্ত হবে। প্রস্তাবিত আইনে হিসাব পদ্ধতি, অবমূল্যায়ন ও মর্টাইজেশন বিধিমালা, মূলধন লাভ সম্পর্কিত বিধান, অদৃশ্য সম্পদ থেকে আয়, স্থানান্তর মূল্য ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন