হোম জাতীয় রাষ্ট্রপতির বক্তব্য শেষে প্রথম দিনের অধিবেশন মুলতবি

রাষ্ট্রপতির বক্তব্য শেষে প্রথম দিনের অধিবেশন মুলতবি

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 92 ভিউজ

জাতীয় ডেস্ক:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের বক্তব্য শেষে প্রথম দিনের অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে বসে দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশন।

ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকালে সংসদ শুরু হয়। পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্পিকার হিসেবে শিরীন শারমিন চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেন। চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী প্রস্তাবকে সমর্থন দেন। পরে কণ্ঠভোটে বিষয়টি সংসদে পাস হয়।

এরপরেই সংসদে বিরতি ঘোষণা করা হয়। সংসদ ভবন সূত্র জানায়, বিরতির সময় রাষ্ট্রপতির কাছে স্পিকার হিসেবে শপথ নেন শিরীন শরামিন চৌধুরী। পরে ডেপুটি স্পিকার হিসেবে শামসুল হক টুকুকে নির্বাচন করেন সংসদ সদস্যরা।

এরপর নতুন এমপিদের উদ্দেশে প্রথমবারের মতো ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বক্তব্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক শক্তি আরও সুদৃঢ় হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে নির্বাচনে জনগণ ও গণতন্ত্রের জয় হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। পাশাপাশি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করায় নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণের রায় মেনে নিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের গণতন্ত্রের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন অত্যন্ত যুগান্তকারী ঘটনা, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।

নির্বাচন ঘিরে একটি মহল সহিংসতা ও সংঘাত সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের শান্ত-স্নিগ্ধ যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের গণতন্ত্র বিরোধী ও সহিংস কর্মকাণ্ড সাময়িকভাবে জনগণকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রাখলেও ভোটারদের ভোটদান থেকে বিরত রাখতে পারেনি। সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্যই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সব পদক্ষেপ সার্থক হয়েছে।

পরে তার ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নেবেন এমপিরা।

এদিকে প্রথম অধিবেশনে স্পিকার বলেন, জানুয়ারি শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে জয় লাভ করে আপনারা সংসদে এসেছেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের যাত্রায় দ্বাদশ সংসদ যুক্ত করেছে এক নতুন অধ্যায়।

এ সময় সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে সংসদ পরিচালনার জন্য স্পিকারের প্রতি আহ্বান জানান বিরোধী দলীয় নেতা জিএম কাদের।

এদিকে প্রথম অধিবেশনে ১২ ব্যক্তি ও বিভিন্ন দুর্ঘটনার জন্য শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।

এরআগে, দুপুর থেকেই সংসদ ভবনে নতুন সংসদ সদস্যদের একের পর এক গাড়িবহর ঢুকতে দেখা যায়। অনেকেই তাদের প্রিয় নেতাকে বরণ করতে ভিড় জমিয়েছেন এখানে। কেউ কেউ আবার গাড়ি থামিয়ে তুলছেন সেলফি। কেউ এসেছেন ফুলের তোড়া সঙ্গে নিয়ে। হাসিমুখে হাত নাড়িয়ে ঢুকছেন সংসদ সদস্যরা। এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে সংসদ ভবন এলাকায়।

গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২৩টিতে জয় পায় আওয়ামী লীগ। এছাড়া স্বতন্ত্রদের মধ্যে বিজয়ী হন ৬২ জন, যাদের মধ্যে ৫৯ জনই আওয়ামী লীগ নেতা। আর জাতীয় পার্টি জয় পেয়েছে ১১টি আসনে। দুটিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং একটিতে জয় পেয়েছে কল্যাণ পার্টি। বর্তমান সংসদ নেতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। বিরোধী দলীয় নেতা হয়েছেন জাতীয় পার্টির জি এম কাদের ও উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে সোমবার (২৯ জানুয়ারি)। বিদায়ী এ সংসদের যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি, শেষ হয় ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর। এতে কার্যদিবস কম হলেও সর্বোচ্চ সংখ্যক ২৫টি অধিবেশন বসেছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন