বাণিজ্য ডেস্ক :
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ যেন বাংলাদেশের জন্য শাপে বর। সাত বছর পর আলু রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে রাশিয়া। তাই বছরে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন আলু রফতানির সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক সুবিধা নিতে ভূরাজনৈতিক চাপ সামলানোই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সরকার।
আলুতে ব্যাক্টেরিয়া পাওয়ায় ২০১৫ সালের ৬ মে অর্থাৎ সাত বছর আগে রাশিয়ায় এ পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। সে সময় দেওয়া সব নির্দেশনা অনেক আগেই পূরণ হলেও ফের দেশটিতে আলু রফতানির অনুমতি মিলছিল না। তবে যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার মুখে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে গত ৫ মার্চ সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে রাশিয়া।
তথ্য বলছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পরও ২৫-৩০ লাখ মেট্রিক টন আলু উদ্বৃত্ত থাকে বাংলাদেশে। এতে বছরে ৫ লাখ মেট্রিক টন আলু রাশিয়ায় রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই দেশটিতে নতুন করে বাজার তৈরিতে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ রফতানিকারকদের।
রাশিয়ার বাজার ধরতে উদ্যোগী হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ আলু রফতানিকারক সমিতির সভাপতি ড. ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘আমাদের প্রায় ২৫ লাখ মেট্রিক টন আলু থেকে যায়। আমাদের জন্য এ মুহূর্তে রাশিয়ার বাজার সবচেয়ে বড়। আমাদের এ বছর কিছুটা হলেও এ বাজার ধরতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ায় যারা আছেন, তাদেরও কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোরও কাজ করতে হবে।’
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাশিয়ায় আলু রফতানির পাশাপাশি ইউরোপ-আমেরিকার বাজার ধরে রাখতেও কৌশলী হতে হবে।
এদিকে কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করে অর্থনীতিবিদ ড. মোহম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এখন ভূ-রাজনৈতিক সম্পর্ক বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে আলু রফতানি করলে আমরা কতটুকু সুবিধা পাব? আমরা কূটনৈতিক দিক থেকে যে অবস্থানে আছি, তার ওপর নির্ভর করবে দেশের ব্যবসায়ীরা আলু রফতানি করতে পারবেন কি না।’
তবে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক বিষয়টি মাথায় রেখেই পরিকল্পনা সাজানোর কথা জানান কৃষি সচিব সায়েদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যেসব দেশ আলু আমদানি করে থাকে, আমরা তাদের সঙ্গে দূতাবাসের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছি। যাতে আমরা সেসব দেশের আলুর চাহিদা পূরণ করতে পারি।’
উল্লেখ্য, নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ার আগে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে রাশিয়ায় ৩১ হাজার মেট্রিক টন আলু রফতানি করেছিল বাংলাদেশ।
