আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের কুরস্ক সীমান্তে পাল্টা হামলা শুরু করেছে ইউক্রেন।
রোববার (৫ জানুয়ারি) এক টেলিগ্রাম পোস্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রে ইয়ারমাক এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, কুরস্ক অঞ্চল, শুভ সংবাদ। রাশিয়ার যা প্রাপ্য, তাই পাচ্ছে।
এর আগে ইউক্রেনের হয়ে ভুয়া তথ্য প্রতিরোধ সংস্থার প্রধান আন্দ্রে কোভালেঙ্কো বলেন, কুরস্কের বিভিন্ন স্থানে রুশ সেনাদের ওপর আকস্মিক হামলা শুরু করেছে ইউক্রেনীয় বাহিনী।
গত বছরের আগস্ট মাসে কুরস্কে হামলা চালিয়ে সেখানকার অনেক এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় ইউক্রেনীয় বাহিনী। এরপর সেখানে উত্তর কোরিয়ার বাহিনীর সহায়তায় পাল্টা হামলা শুরু করেছিলেন রুশ সেনারা।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম তাস জানায়, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, রাশিয়ার হামলা ঠেকাতে ইউক্রেনীয় বাহিনী পাল্টা হামলা শুরু করেছে। সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটার ভেতরে বারডেইন অঞ্চলে দুইটি ট্যাংক, একটি প্রতিবন্ধক-বিধ্বংসী যান এবং ১২টি সাঁজোয়া যুদ্ধযান প্রতিরোধ করা হয়েছে।
রাশিয়ার সামরিক ব্লগাররা দাবি করেছেন, ইউক্রেনীয়রা সুদজা ঘাঁটি থেকে কুরস্ক শহরের দিকে যেতে বারদিন এবং বলশয় সোলদাতস্কয়ে গ্রামগুলোর দিকে হামলা চালিয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক জানিয়েছেন, কুরস্ক অঞ্চল থেকে ‘ভালো খবর’ পাওয়া যাচ্ছে এবং রাশিয়া তাদের প্রাপ্য শাস্তি পাচ্ছে।
ইউক্রেনের শীর্ষ প্রতিরোধ তথ্য কর্মকর্তা আন্দ্রি কোভালেঙ্কো টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, কুরস্কে রুশরা বড় ধরনের উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে। তাদের ওপর বিভিন্ন দিক থেকে হামলা হয়েছে, যা তাদের জন্য বিস্ময়ের কারণ হয়েছে।
তবে এই আক্রমণটি ফ্রন্টলাইনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। রুশ ব্লগার ইউরি পোদোলিয়াকা বলেছেন, এই অভিযানটি বিভ্রান্তিমূলক হতে পারে। আরেক ব্লগার আলেকজান্ডার কোটস মনে করেন, মূল হামলা অন্য কোথাও চালানো হতে পারে।
ইউক্রেনীয় বাহিনী বর্তমানে জনবলের সংকটে ভুগছে এবং পূর্বাঞ্চলে অবস্থান হারাচ্ছে বলে জানা গেছে। রুশ বাহিনী সেখানে অগ্রসরমান।
এরই মধ্যে, ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর ড্রোন হামলা চালিয়েছে। কিয়েভ, পলতাভা, সুমি, খারকিভ, চেরনিহিভ, চেরকাসি, দনিপ্রোপেট্রোভস্ক, ঝিতোমির এবং খমেলনিতস্কি অঞ্চলে ৬১টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। খারকিভ অঞ্চলে কিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে, নভেম্বর মাসে ইউক্রেন দাবি করেছিল, কুরস্ক অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল তাদের বাহিনী। ইউক্রেনীয় সেনাদের আকস্মিক হামলার জবাবে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই অভিযানকে একটি বড় ধরনের উসকানি বলে অভিহিত করেছেন। যদিও ইউক্রেনের সেনাপ্রধান দাবি করেছেন, তারা ১ হাজার ২০০ বর্গকিলোমিটার রুশ ভূখণ্ড ও ৯৩টি গ্রাম নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। কিছু ভূখণ্ড পরে পুনর্দখল করেছে রাশিয়া।