হোম অন্যান্যসারাদেশ রাজধানীতে মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে উপকূলীয় প্রতিনিধিরা টেকসই বেড়িবাঁধের মেগা প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা জরুরী ভিত্তিতে সংস্কারের দাবি

সংকল্প ডেস্ক :

উপকূলীয় অঞ্চলের জীবন-জীবিকার সুরক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় গৃহীত প্রকল্প সমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন উপকূলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার প্রতিনিধিরা। তারা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টগুলোর তালিকা তুলে ধরে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে ওই সকল পয়েণ্টে জরুরী ভিত্তিতে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।

আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘দূর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের সুরক্ষায় প্রয়োজন টেকসই বেড়িবাঁধ ও আশু করণীয়’ শীর্ষক মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে এই দাবি জানানো হয়। নাগরিক সংগঠন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন এবং বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু।

আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালিন নোমানী, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্য সচিব আমিনুর রসুল বাবুল, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সচেতন সংস্থার সাকিলা পারভীন, লিডার্সের সাইফুল ইসলাম, নাগরিক প্রতিনিধি শেখ আব্দুল্লাহ-আল মামুন, অ্যাডভোকেট সব্যসাচী মণ্ডল, নিউটন কুমার রায় প্রমূখ।

অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু সম্প্রতি দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ৬০ এর দশকে নির্মিত বাঁধগুলো দীর্ঘ দিন অবহেলিত ছিলো। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাঁধগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সরকারের ডেল্টা প্লানে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের সুনির্দ্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া আম্ফান পরবর্তী সময়ে খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চলে চারটি মেগা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী কয়েকদফা ওই এলাকা পরিদের্শন করেছেন। তারা মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন বলে আশাকরি।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার মধ্যে গত বছর সুপার সাইক্লোন আম্ফান উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ঝড় ও জ্বলোচ্ছাসে বাঁধ ভেঙ্গে খুলনা-সাতক্ষীরায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এরপর টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তার বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়নি।

এরআগে ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলার পর বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও তার সুফল পাওয়া যায়নি। যে কারণে কপোতাক্ষ নদের মামুদকাটি, আগড়ঘাটাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দুই শতাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই ঝড়ো মৌসুমকে সামনে রেখে চরম ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে ওই অঞ্চলের জনগণ। এই ঝুঁকি মোকাবেলায় দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মনিটারিং জোরদার করার দাবি জানান তারা।

অনুষ্ঠানে ৬ দফা দাবি তুলে ধরে বলা হয়, সুন্দরবনের তীরবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দূর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ঝুঁকিতে থাকা বেড়িবাঁধগুলো দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষনের জন্য জরুরি তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ওয়াপদা) বাঁধের ১০০ মিটারের মধ্যে চিংড়ি বা কাঁকড়ার ঘের তৈরিতে সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা দ্রুত কার্যকর করতে হবে। উপকূলীয় জনগণের নিরাপদ খাবার পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সর্বোপরি উপকূলের উন্নয়নে পৃথক বোর্ড গঠনের সুপারিশ করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন