হোম জাতীয় রাজধানীতে দিনে ১৪০ কোটি লিটার পয়ঃবর্জ্য মিশে যাচ্ছে জলাধারে

রাজধানীতে দিনে ১৪০ কোটি লিটার পয়ঃবর্জ্য মিশে যাচ্ছে জলাধারে

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 12 ভিউজ

জাতীয় ডেস্ক:

রাজধানীতে দিনে ১৪০ কোটি লিটার পয়ঃবর্জ্য অপরিশোধিত অবস্থায় খোলা জলাধারগুলোতে মিশে যাচ্ছে। পাশাপাশি দেশের কঠিন বর্জ্যের অর্ধেকই সংগ্রহ করা হচ্ছে না। এগুলো পরবর্তীতে খোলা আবহাওয়ায় মাটি, পানি ও বাতাসের সঙ্গে মিশে পরিবেশের ব্যাপক দূষণ ঘটাচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার বিকল্প নেই। এজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। কারণ জনসচেতনতা না বাড়লে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নেয়া কোন পদক্ষেপই সফল হবে না।

সোমবার ( এপ্রিল ২৯) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘টেকসই নগরায়ন ও পরিবেশের সুরক্ষা সুপারিশমালা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় উঠে আসে এসব বিষয়। প্রেমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটস কর্মসূচির আওতায় এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইউএস এইড ও কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনাল।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক প্রদীপ কুমার রায় বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা জনসচেতনতা খুবই জরুরি। তাহলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বাস্তবায়ন সহজ হয়। দেশের প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে শুরু করে অন্য বর্জ্যের প্রধান শিকার মূলত বস্তিবাসীসহ প্রান্তিক জনগণ। তাই পরিবেশ রক্ষায় প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করতে হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান বলেন, জনসচেতনতা ও জনসম্পৃক্ততা ছাড়া সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে সুষ্ঠুভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। রাজধানীতে প্রতিদিন ১৭৫ কোটি লিটার পয়ঃবর্জ্য উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে পরিশোধিত হয় মাত্র ৩৫ কোটি লিটার। বাকি ১৪০ কোটি লিটার পয়ঃবর্জ্য অপরিশোধিত অবস্থাতেই পরিবেশ ও জলাধারগুলোতে মিশে যায়। এই অবস্থা নিরসনে ডিএনসিসির উদ্যোগে ক্লাস্টার পদ্ধতিতে এলাকাভিত্তিক পয়োঃবর্জ্য নিষ্কাশনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রাজধানীর জলাধার ও খালগুলোকে সংরক্ষণের জন্য ডিএনসিসির উদ্যোগে অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে খালগুলোকে উদ্ধার করা হচ্ছে। প্রয়োজনে বহুতল ভবন ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কারও সঙ্গেই কোনো আপস করা হচ্ছে না।
ডিএনসিসি এলাকায় প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার টন কঠিন বর্জ্য উৎপাদিত হয়। এসব বর্জ্য দিয়ে দিনে ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও ডিন ড. ইজাজ হোসেন বলেন, দেশের কঠিন বর্জ্যের অর্ধেকই সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। পরবর্তীতে যা আমাদের পরিবেশের সঙ্গে মিশে গিয়ে ব্যাপকভাবে পরিবেশ দূষণ ঘটাচ্ছে। এই দূষণের সবচেয়ে বড় শিকার দেশের প্রান্তিক ও তৃণমূলের জনগোষ্ঠী।

তিনি আরও বলেন, দেশের তৈরি হওয়া কঠিন বর্জ্যের ৭৫ শতাংশই খাদ্য থেকে উৎপাদিত বর্জ্য, যেখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব নয়। তবে এগুলো থেকে জৈব সার উৎপাদনের মাধ্যমে তা জমিতে প্রয়োগ করে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি সম্ভব।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন- ইউএসএইড বাংলাদেশের অফিস অব ইকোনোমিক গ্রোথের পরিচালক মোহাম্মদ খান, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের ভাইস প্রেসিডেন্ট গোয়েনডোলিন অ্যাপেল।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন