সৌদি আরব থেকে নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছিলেন যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে উদ্ধার হওয়া ইরানিরা। বিমানে যার যার আসনে বসে আছেন সবাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই রানওয়ে থেকে উড়াল দেবে আকাশযানটি। তখনই সেখানে হাজির সৌদি আরবের এক শীর্ষ কমান্ডার। বিমানে থাকা ইরানিদের উষ্ণ বিদায় জানালেন তিনি। শোনালেন ভ্রাতৃত্বের কথা।
ঘটনাটি ঘটেছে গেল শনিবার (২৯ এপ্রিল) জেদ্দায়। সৌদি পশ্চিমাঞ্চলীয় আঞ্চলিক কমান্ডার মেজর জেনারেল আহমেদ আল-দাবাইসের সঙ্গে ছিলেন সৌদিতে ইরানি উপরাষ্ট্রদূত হাসান জারাঙ্গার।
উত্তরপূর্ব আফ্রিকার দেশ সুদানে দুই জেনারেলের অনুগত বাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘাত চলছে। সুদানিজ সশস্ত্র বাহিনীর (এসএএফ) কমান্ডার আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও দ্য র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগালোর মধ্যে দ্বন্দ্ব থেকেই এই সংঘাত। দুই জেনারেলই দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। আরএসএফের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক রয়েছে।
সৌদি আরব এখন এক লাখ কোটি মার্কিন ডলার অর্থনীতির দেশ। রক্ষণশীল, যুদ্ধপ্রিয় ও তেল উৎপাদনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সৌদি আরবের যে পরিচিতি রয়েছে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে তারা। আরব উপদ্বীপের দেশটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক খেলোয়াড় ও আঞ্চলিক পর্যটন এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্রবিন্দু হতে চাচ্ছে। যে কারণে খোলস পাল্টে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় মরিয়া মোহাম্মদ বিন সালমান।
দেশটির গুরুত্বপূর্ণ তেলস্থাপনা ও বিমানবন্দরগুলো বারবার হামলার শিকার হচ্ছিল। অধিকাংশ হামলারই দায় স্বীকার করেছে পার্শ্ববর্তী দেশের হুতিরা। এরপর কেবল ইরানই না, হুতিদের সঙ্গেও দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নিতে তৎপর হয়েছে সৌদি সরকার।
এদিকে গেল সপ্তাহে মক্কায় ওমরাহ পালন করতে দেখা গেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের একদল নেতাকে। দুই বছর পরে জেদ্দা শহরে মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করেছেন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। গত এক দশক ধরে হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এ ছাড়া গত দশকে সৌদি আরবের সঙ্গেও হামাসের সম্পর্কের টানাপোড়েন ছিল।
সূত্র: সিএনএন ও আল-জাজিরা, সময় টিভি