আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব কাটিয়ে সর্বশেষ মাসে, অর্থাৎ জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের চাকরির বাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা গিয়েছে। দেশটিতে বর্তমানে বেকারত্বের হার মাত্র তিন দশমিক চার শতাংশ; যা ১৯৬৯ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন। এতেই বোঝা যায়, মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় (ফেডারেল) ব্যাংকের কর্মকর্তারা বেশ জোর দিচ্ছেন। খবর রয়টার্সের।
কর্মসংস্থান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবিভাগ। এতে দেখা যায়, গত বছরে কর্মসংস্থানের সুযোগ পূর্ভাবাসের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল। দেশটির অর্থনীতি মন্দার কাছাকাছি ছিল না।
শ্রম বিভাগের তথ্যানুযায়ী, জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে পাঁচ লাখ ১৭ হাজার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। এই সংখ্যা সবশেষ ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছরের শেষ মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বরে দুই লাখ ৬০ হাজার নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। গত মাসে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সংখ্যা আগের বছরের মোট মাসিক গড় থেকে চার লাখ এক হাজার বেশি।
গত মাসে অবসর ও অতিথিয়েতা খাতে নতুন করে এক লাখ ২৮ হাজার কর্মী যোগ দিয়েছেন। আর রেস্টুরেন্টগুলোতে ৯৯ হাজার কর্মী নতুন করে চাকরি পেয়েছেন। এ ছাড়া নির্মাণ খাতে নতুন করে ২৫ হাজার ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে যোগ দিয়েছেন ১৯ হাজার কর্মী।
রয়টার্স বলছে, কর্মসংস্থান বাড়লেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতে চাকরিচ্যুতের সংখ্যা বেড়েছে। একইসঙ্গে সুদের হার বাড়ায় আবাসন খাতেও কিছুটা মন্দাভাব রয়েছে। তবে, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি নিয়ে শিথিল রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শুক্রবারের প্রতিবেদনের পর ফেডারেল ব্যাংক সুদের হার তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী, অর্থাৎ পাঁচ দশমিক এক শতাংশ পর্যন্ত নিতে পারে। এমনকি, তারা এই সুদের হার বেশ কিছুদিন রাখতেও পারে।
লন্ডনের ইউনিক্রেডিট ব্যাংকের আন্তর্জাতিক অর্থনীতির প্রধান ড্যানিয়েল ভেরনাজ্জা বলেন, ‘শ্রমবাজার এখন উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে। ফেডারেল ব্যাংকের কাজে এটি আরও গরম হচ্ছে।’
২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৪৮ লাখ নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছিল। এর আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৪৫ লাখ।
এদিকে, চাকরির বাজারে কর্মী নিয়োগ বাড়লেও মজুরি বৃদ্ধি কমেছে। জানুয়ারিতে গড় ঘণ্টায় মজুরি বেড়েছে শূন্য দশমিক তিন শতাংশ, যা গত ডিসেম্বরে ছিল শূন্য দশমিক চার শতাংশ।