হোম আন্তর্জাতিক যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপে প্রস্তুত ইরান

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপে প্রস্তুত ইরান

কর্তৃক Editor
০ মন্তব্য 54 ভিউজ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের বিরোধ আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে সহজেই সমাধান করা সম্ভব। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি হামলার পর দুপক্ষের মধ্যে আস্থার বিষয়টি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। সোমবার (৭ জুলাই) প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন পেজেশকিয়ান। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎকার নেন যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল পডকাস্টার টাকর কার্লসন। সাক্ষাৎকারটি সোমবার প্রকাশ করা হয়। কার্লসনকে পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্ব ও বিরোধ খুব সহজেই আলোচনা ও সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।’

তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্ররোচনায় ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়েন। সোমবার হোয়াইট হাউজে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটন সফর করছেন নেতানিয়াহু।

পেজেশকিয়ান বলেন, ‘এই অঞ্চলকে শান্তি ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে নিতে এবং ইসরায়েলকে তার যথাস্থানে ফিরিয়ে দিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যথেষ্ট সক্ষম। নতুবা তিনি নিজেই এক অগভীর অথচ অন্তহীন খাদে, এক কর্দমাক্ত জলাভূমিতে পড়ে যেতে পারেন। সিদ্ধান্তটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হাতে।’

হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট জানান, তিনি নিশ্চিত নন ট্রাম্প ইরানি প্রেসিডেন্টের মন্তব্য দেখেছেন কিনা। তবে তিনি একমত যে ট্রাম্পই এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সঠিক ব্যক্তি।

সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনাগুলো ভেঙে দিয়েছে ইসরায়েল। কারণ ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে বিমান হামলা শুরু করে, যা ১২ দিনের এক বিস্তৃত আকাশযুদ্ধে গড়ায়। এতে ইরানের শীর্ষ সেনা কমান্ডার ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা নিহত হন।’

‘আমরা কীভাবে আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বাস করব?’ পেজেশকিয়ান প্রশ্ন তোলেন। ‘আমরা কীভাবে নিশ্চিত হবো, আলোচনার মাঝপথে ইসরায়েলকে আবারও আমাদের ওপর হামলার অনুমতি দেওয়া হবে না?’

পেজেশকিয়ানের অভিযোগ, ইসরায়েল তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।

পেজেশকিয়ান আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, ওরা চেষ্টা করেছিল। তারা সে অনুযায়ী কাজও করেছে; কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। আমি একটি বৈঠকে ছিলাম। আমরা যে এলাকায় বৈঠক করছিলাম, ওরা সেখানে বোমা ফেলতে চেয়েছিল।’

ইসরায়েল এখনও এই অভিযোগের কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে গত মাসে এক সিনিয়র ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলায় তারা ৩০ জনের বেশি শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ১১ জন সিনিয়র পারমাণবিক বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে।

এদিকে ট্রাম্প বলেন, তিনি নেতানিয়াহুর সঙ্গে ইরান ও তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় চালানো হামলাকে ‘বিশাল সাফল্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

গত ১৬ জুন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করার পরিকল্পনা থেকে পুরোপুরি সরে আসেনি ইসরায়েল। তিনি দাবি করেন, এতে ‘সংঘাতের অবসান হবে।’ এর আগে গুঞ্জন উঠেছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই পরিকল্পনা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।

গত ২৪ জুন থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে। তবে কার্লসনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান অভিযোগ করেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু মধ্যপ্রাচ্যে ‘চিরন্তন যুদ্ধ’ চালিয়ে যাওয়ার জন্য নিজস্ব পরিকল্পনা আঁটছেন। ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে না জড়াতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শুক্রবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, তার বিশ্বাস ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি স্থায়ীভাবে পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। যদিও ইরান চাইলে অন্যত্র থেকে তা আবার শুরু করতে পারে।

ইরান সবসময়ই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের প্রচেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

সম্পর্কিত পোস্ট

মতামত দিন